মালদ্বীপের নিকট অতীতে কোনো প্রেসিডেন্টই দায়িত্ব নিয়ে প্রথমে ভারতকে বাদ দিয়ে চীন সফরে যাননি। তবে এবার ব্যতিক্রম ঘটতে যাচ্ছে। মালদ্বীপের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লি না গিয়ে যাচ্ছেন বেইজিংয়ে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রটি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট চলতি মাসের শুরুর দিকেই চীন সফরে যেতে পারেন। তেমনটা হলে, তিনিই হবেন মালদ্বীপের প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি নয়াদিল্লি না গিয়ে বেইজিংয়ে যাবেন। অর্থাৎ, অলিখিত এক প্রকারের প্রথা ভেঙে নয়াদিল্লি ডিঙিয়ে বেইজিং যাচ্ছেন তিনি।
গত বছরের নভেম্বর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর মুইজ্জু দুইবার বিদেশ সফরে গিয়েছেন। প্রথমে তিনি গিয়েছিলেন তুরস্কে এবং এরপর গিয়েছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। তৃতীয় সফর হিসেবে তিনি যেতে পারেন বেইজিং। যদিও এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
এর আগে, ২০০৮ সালে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মোহাম্মদ নাশিদ প্রথম সফরের গন্তব্য হিসেবে ভারতকেই বেছে নিয়েছিলেন। এর পর ২০১২ সালে মোহাম্মদ ওয়াহিদ ও ২০১৪ সালে আবদুল্লাহ ইয়ামিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরের গন্তব্য হিসেবে ভারতকেই বেছে নিয়েছিলেন। এমনকি পরবর্তী দুজন ভারতের প্রতি কম সহানুভূতিশীল হওয়ার পরও।
জনমনে ধারণা রয়েছে যে, মোহাম্মদ মুইজ্জু ভারতের তুলনায় চীনের প্রতিই বেশি সহানুভূতিশীল। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সালিহের বিরুদ্ধে মুইজ্জু অভিযোগ তুলেছিলেন যে, তিনি ভারতের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করার মাধ্যমে মালদ্বীপের ভ্রাতৃত্বকে বিনষ্ট করার চেষ্টা করেছে।
পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার এক দিন পরই মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাদের সরিয়ে নিতে নয়াদিল্লিকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেন। পরে দুবাইয়ে কপ-২৮ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের সময় মুইজ্জু বিষয়টি আবারও উত্থাপন করেন। সর্বশেষ, মাত্র সপ্তাহ দুয়েক আগে ভারতের সঙ্গে হাইড্রোগ্রাফিক চুক্তি বাতিল করে মালদ্বীপ।