পতন কোনো সময়ই সুবিধার জিনিস নয়। বৃদ্ধ বয়সে সেটা আরও মারাত্মক। জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের নিরাপত্তা আর স্বাধীন চলাফেরায় এ এক বড় বাধা। নানা দেশে বয়স্ক ব্যক্তিদের পতন মারাত্মক শারীরিক আঘাতের এক বড় কারণ।
আমেরিকার সিডিসি জানিয়েছে, ৬৫ বছরের বেশি বয়সের আমেরিকানদের এক-চতুর্থাংশ পা পিছলে পড়েন। প্রতিবছর এমন আঘাত পেয়ে ৩০ লাখ মানুষ আসেন ইআরে। এতে মৃত্যু হয় প্রায় ২৯ হাজার মানুষের।
লাইফস্টাইলের কিছু অদলবদল আর পোশাক পরিধানের অভ্যাস বদল করে পতনজনিত কিছু দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। পতন ঠেকাতে পোশাক পরিধানের কিছু কৌশল বাতলেছেন ন্যাশনাল কাউন্সিল অন এজিংয়ের বিশেষজ্ঞরা।
- যে প্যান্ট বা শর্ট পরবেন তা চেয়ারে বসে পরুন। লুঙ্গি না পরা ভালো। তাতে পতনের আশঙ্কা বেশি।
- একটি পা ঢোকান প্যান্টের এক পায়ে, তারপর ঢোকান অন্যটা।
- প্যান্টের নিচের প্রান্ত গোড়ালির ওপর থাকতে হবে। এতে সহজে উঠে দাঁড়াতে পারবেন।
- কোমরে হাত দিয়ে প্যান্ট ধরে তুলুন হাঁটু পর্যন্ত, এরপর দাঁড়ান। তারপর জিপার টানুন, বোতাম লাগান।
কাদের পতনের আশঙ্কা বেশি:
- যাঁরা একবার পড়েছেন, তাঁদের দ্বিতীয়বার পতনের আশঙ্কা বেশি।
- চিকিৎসক যাঁদের লাঠি বা ওয়াকার ব্যবহার করতে বলেছেন।
- হাঁটতে গিয়ে যাঁদের ভারসাম্য ঠিক থাকে না, তাঁদের পতনের আশঙ্কা আছে।
- যাঁরা পড়ে যাবেন—এমন দুশ্চিন্তা করেন।
- পায়ের পেশি দুর্বল যাঁদের।
- রাতে যাঁদের দ্রুত ওয়াশরুমে যাওয়ার অভ্যাস আছে, তাঁদের পতনের আশঙ্কা বেশি থাকে।
- যাঁদের পা অবশ লাগে, তাঁদের হোঁচট খেয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি।
- ঘুমের ওষুধ বা বিষণ্নতার ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে যাঁদের।
- যাঁরা বিষণ্নতায় ভুগছেন।
পতন ঠেকাতে ঘরের নিরাপত্তা:
- শাওয়ার সিট, ধরে রাখার বার, হাতের নাগালে শাওয়ার—এ রকম কিছু সাপোর্ট স্থাপন করুন নিরাপত্তার জন্য।
- উজ্জ্বল, তবে চোখ ধাঁধায় না এমন আলো দেওয়া বাতি লাগান বাড়িতে।
- শক্তপোক্ত ভালো চেয়ার রাখুন ঘরে, যাতে বসে নিরাপদে পোশাক পরা যায়।
- চলার পথ পরিষ্কার রাখুন, যাতে পা পেঁচিয়ে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা না থাকে।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ