হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

শিশুরা খাটো হয় কেন, প্রতিকারে কী করবেন

ডা. সুরাইয়া বেগম

ছবি: সংগৃহীত

খর্বাকৃতি বা শর্ট স্ট্রাকচারের ক্ষেত্রে শিশুদের উচ্চতা বয়সের তুলনায় কম হয়। কোনো শিশুর উচ্চতা থার্ড সেন্টাইলের নিচে হলে খর্বকায় হিসেবে ধরা হয়।

খর্বাকৃতি বা খাটো আকৃতি দুই ধরনের—নরমাল ভ্যারিয়েন্ট ও প্যাথলজিক্যাল। নরমাল ভ্যারিয়েন্ট খর্বাকৃতির কারণ বংশ ও গঠনগত। প্যাথলজিক্যাল খর্বাকৃতির কারণ দীর্ঘমেয়াদি রোগ, হরমোনজনিত রোগ, অপুষ্টি, সিনড্রোমিক এবং মানসিক চাপ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খর্বাকৃতির কারণ বংশগত। এ ক্ষেত্রে পরিবারের অন্যান্য সদস্য; যেমন মা, বাবা অথবা ভাই-বোন খাটো হয়। বংশগত খর্বাকৃতিকে ফ্যামিলিয়াল খর্বাকৃতিও বলা হয়। গঠনগত খর্বাকৃতির ক্ষেত্রে শৈশবকালীন উচ্চতার হার স্বাভাবিকের তুলনায় কম হয়। এ ছাড়া এসব শিশুর বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন দেরিতে হয়। মা, বাবা বা উভয়ের ক্ষেত্রে এই সমস্যা থাকতে পারে। এসব শিশু বয়সের তুলনায় দেরিতে হলেও স্বাভাবিক উচ্চতা পায় না।

দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যেমন এজমা, জন্মগত হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া, লিভার বা কিডনির রোগ, থ্যালাসেমিয়া, রিকেটস এবং সিস্টিক ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত শিশুদের খর্বকায় হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দীর্ঘমেয়াদি স্টেরয়েড গ্রহণের কারণেও শিশুরা খাটো হয়। হরমোনজনিত রোগ; যেমন থাইরয়েড অথবা গ্রোথ হরমোনের স্বল্পতা এবং কুশিং সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুরা পরবর্তী সময়ে খাটো হয়। অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণের ফলে প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলের অভাবে শিশুরা সঠিকভাবে বাড়ে না। জন্মকালীন অপুষ্টি (আইইউজিআর), মাতৃত্বকালীন অথবা ভ্রূণের সমস্যার জন্যও শিশুরা খাটো হয়। এ ছাড়া সিনড্রোমিক কারণ; যেমন ডাউন সিনড্রোম, টারনার সিনড্রোম ও একন্ড্রোপ্লাসিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা খর্বাকৃতি বা খাটো হয়। দীর্ঘমেয়াদি অতিরিক্ত মানসিক চাপের জন্যও শিশুদের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

এ ধরনের ক্ষেত্রে মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ এবং পারিবারিক সমস্যা শিশুর খাটো হওয়ার কারণ।

চিকিৎসা

বংশ ও গঠনগত খর্বাকৃতি: এ ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। এখানে কাউন্সেলিংয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

দীর্ঘমেয়াদি রোগ: এসব রোগের কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে খর্বাকৃতি থেকে মুক্ত থাকা যায়।

হরমোনজনিত রোগ: থাইরয়েড হরমোন অথবা গ্রোথ হরমোন প্রদানের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

অপুষ্টি: ছোটবেলা থেকে শিশুর পুষ্টির দিকে নজর দিতে হবে। শিশুর জন্মকালীন অপুষ্টির ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় মায়ের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে।

সিনড্রোমিক: টারনার সিনড্রোমজনিত সমস্যায় গ্রোথ হরমোন দেওয়ার মাধ্যমে উচ্চতা বৃদ্ধি করা হয়।

মানসিক চাপ: চাপমুক্ত পরিবেশে শিশুকে লালনপালন এবং কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ছবি: সংগৃহীত

প্রতিরোধে করণীয়

» মায়ের পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে।

» শৈশবকালে শিশুর সুষম খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম, খেলাধুলা ও ব্যায়ামের ব্যবস্থা করতে হবে।

» দ্রুত রোগনির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

» শিশুর নিয়মিত চেকআপ ও বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সঠিক সময়ে খর্বাকৃতি নিরূপণ করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

» বংশ ও গঠনগত খর্বাকৃতি প্রতিরোধ সম্ভব নয়।

খর্বাকৃতির শিশুরা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়। এ কারণে তারা হীনম্মন্যতায় ভোগে। এটি দূর করতে অভিভাবক এবং অন্যদের সচেতনতা প্রয়োজন।

পরামর্শ দিয়েছেন: শিশু এন্ড্রোক্রাইনোলজিস্ট, চেম্বার: আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর-৬

গলা ও বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা: কেন হয় এবং প্রতিরোধে করণীয়

যেসব তথ্যে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না

মনমেজাজ ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার জরুরি

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে করণীয়

সাইনাসের সংক্রমণে চোখ ব্যথায় করণীয়

তরুণদের ডায়াবেটিস এক অশনিসংকেত

গলাব্যথার সবচেয়ে অবহেলিত কারণ টনসিলোফ্যারিঞ্জাইটিস

বিশ্ব হসপিস এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ার দিবসে পিসিএসবি’র বিশেষ আয়োজন

দেশে বাড়ছে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ, সতর্ক থাকবেন যেভাবে