হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

তরুণেরা মিনি স্ট্রোক থেকে সতর্ক থাকুন

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী

হঠাৎ মাথা ঘুরে গেল, চোখ অন্ধকার অল্প সময়ের জন্য। একে বলে ট্রাঞ্জিয়েন্ট ইস্কিমিক অ্যাটাক বা মিনি স্ট্রোক। একে অনেকে পাত্তা দেন না। সেটা খুব ভালো প্রবণতা নয়। চিকিৎসক ও বিভিন্ন সমীক্ষা জানাচ্ছে, দিন দিন তরুণদের মধ্যে মিনি স্ট্রোকের প্রবণতা বাড়ছে। তাই নতুন বছর সতর্ক থাকুন।

আমেরিকায় তিনজনে একজনের এমন হলেও মাত্র ৩ শতাংশ চিকিৎসকের কাছে যান। আমাদের দেশের পরিসংখ্যান জানা 
নেই। তবে এটি হলেও গ্রাহ্য করা হয় না, তা বলাই বাহুল্য। আমেরিকান স্ট্রোক সমিতির ২০১৭ সালের এক সমীক্ষা জানিয়েছে, মিনি স্ট্রোক যাঁদের হয়, তাঁদের পূর্ণ স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা তিন মাসের মধ্যে ১০ শতাংশ। আর সেটা ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৭ দিনের মধ্যে হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি।

মিনি স্ট্রোক হলে সাময়িকভাবে মগজ বিকল হয়। কাজকর্মে সাময়িক ব্যাঘাত তৈরি হয় মগজে রক্ত সরবরাহে বাধা পড়ার জন্য। পূর্ণ স্ট্রোকের সঙ্গে এর তফাত হলো, এতে মগজে স্থায়ী ক্ষতি হয়।

উপসর্গ
» হঠাৎ করে প্রচণ্ড মাথা ধরা। এটি বড় স্ট্রোকের উপসর্গ হতে পারে। তাই নিজে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
» হঠাৎ করে শরীর অবশ ও দুর্বল হওয়া। মুখ, বাহু আর পায়ে দুর্বলতা বেশি থাকতে পারে।
» কথা বলতে অচেতনতা লোপ পাওয়া কিংবা কথায় জড়তা আসতে পারে।
» দৃষ্টিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
» মাথা ঝিমঝিম করতে পারে। সেই সঙ্গে দেখা দিতে পারে শরীরে ভারসাম্যহীনতা।
» হতবিহ্বল ও স্মৃতিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
» কোনো কিছু গিলতে সমস্যা হতে পারে।
» পায়ে সুচ ফোটানোর মতো অনুভূতি হতে পারে। 
» খুব কম সময়ের জন্য চেতনা লোপ হতে পারে।
» অকারণে বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে। 
» মাত্রা ছাড়া ক্লান্তি ও অবসন্নতা দেখা দিতে পারে।
» মুখের এক পাশ ঝুলে যেতে পারে।

এমন সব উপসর্গ দেখা দিলে, অবিলম্বে ৯৯৯-এ ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে সোজা চলে যান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। উপসর্গ চলে গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, এসব উপসর্গ দেখা দেওয়ার ফলে শরীরে রক্ত চলাচল বাধা পায়। রক্ত চলাচল সহজ হয়েছে কি না, তা যাচাই করা জরুরি। মিনি স্ট্রোকের পর এক মাস কোনো যানবাহন চালানো উচিত নয়।

সেরে ওঠার জন্য
» বাড়তি শরীরচর্চা করবেন না। তাতে রক্ত চলাচল বেড়ে মগজে আবার ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
» স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। ফাস্ট ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
» যথেষ্ট বিশ্রাম নিতে হবে।
» রেস্পাইট কেয়ারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

তরুণদের মিনি স্ট্রোক বেড়ে যাওয়ার কারণ
» স্থূলতা বেড়ে যাওয়া।
» ডায়াবেটিসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া। 
» উচ্চ রক্তচাপ।
» কোলেস্টেরল সীমানার বাইরে চলে যাওয়া। 
» ধূমপান ও অ্যালকোহল পান।
» শরীরচর্চা কম করা।

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ

গলা ও বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা: কেন হয় এবং প্রতিরোধে করণীয়

যেসব তথ্যে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না

মনমেজাজ ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার জরুরি

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে করণীয়

সাইনাসের সংক্রমণে চোখ ব্যথায় করণীয়

তরুণদের ডায়াবেটিস এক অশনিসংকেত

গলাব্যথার সবচেয়ে অবহেলিত কারণ টনসিলোফ্যারিঞ্জাইটিস

বিশ্ব হসপিস এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ার দিবসে পিসিএসবি’র বিশেষ আয়োজন

দেশে বাড়ছে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ, সতর্ক থাকবেন যেভাবে