হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

এই সময়ে দাঁতের সমস্যা

ডা. পূজা সাহা

শীতল আবহাওয়ার জন্য অনেকেরই শীতকাল খুব পছন্দের। কিন্তু এই শীতকালে যেমন অন্যান্য রোগের প্রকোপ বাড়ে, তেমনি দাঁতের শিরশির ও ব্যথাও। যাঁরা ভুক্তভোগী, তাঁরাই এর কষ্টটা  বোঝেন।

অনেকের এ সময় ঠান্ডা পানি খেলে বা কুলকুচা করলে দাঁত শিরশির করে। যাঁদের এ সমস্যা হচ্ছে, ধরে নিতে হবে তাঁদের দাঁতে একটু হলেও সমস্যা আছে। হতে পারে এর জন্য অনেকের চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু অনেক সময়ই দাঁত শিরশির করা বেশ কিছু রোগের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমনটি বোধ হলে অবহেলা না করে নিকটবর্তী বিডিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসকের কাছে চেকআপ করিয়ে নিশ্চিত হতে হবে, দাঁতে কোনো সমস্যা আছে কি না।

তবে এ-ও মনে রাখতে হবে যে শীতকালে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি ব্যবহার শিরশির করা দাঁতের স্বাভাবিক অবস্থার প্রকাশ। বাইরে যতই ঠান্ডা থাকুক, মুখের ভেতরের তাপমাত্রা সব সময় ৯৮.৪ ডিগ্রি বা তার কাছাকাছি থাকে। তাই ঠান্ডাজাতীয় কিছু মুখে দিলে আকস্মিক তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় দাঁত শিরশির করে।

অনেকে খুব জোর দিয়ে বা বেশি সময় ধরে ব্রাশ করেন। এতে দাঁতের মাড়ি সরে যায় বা দাঁতের গোড়ার দিকে ক্ষয়ে যায়। এমন অবস্থায়ও শিরশির করে।

অনেকের দাঁতের মাড়িতে পাথরের মতো জমে থাকে বা দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে মাংসজাতীয় খাবার আটকে থাকে। টুথপিক দিয়ে খুঁচিয়ে ওই সব খাবার বের করতে গিয়ে পকেটের মতো হয়। এসব কারণেও শীতকালে পানি লাগলে দাঁত শিরশির করে।

বেশির ভাগ দাঁতের অসুখে প্রথমে শিরশির অনুভূতি দিয়ে লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন ক্যারিজ বা ক্ষত। দাঁতে ক্যারিজ বা ক্ষত হলে প্রথম দিকে ব্যথা হয় না। দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় না কিংবা দাঁত ভেঙে যায় না। প্রথমে পানি খেলে শিরশির করে, টক খেলে দাঁত টক হয়ে যায়, মিষ্টি খেলে অস্বস্তি হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলা হয় হাইপারেমিয়া। এই অবস্থায় চিকিৎসা করা না হলে অবস্থা অ্যাকিউট পাল্পাইটিসের দিকে যায়। তখন ঠান্ডা বা গরম পানি খেলে তীব্র ব্যথার অনুভূতি হয়; বিশেষ করে রাতে অসহ্য ব্যথা হয়।

এই অবস্থায়ও চিকিৎসা না করা হলে দাঁতের পাল্প আক্রান্ত হয়ে ক্রনিক পাল্পাইটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনটি হলে সাধারণত ব্যথা তীব্র হয় না। যদি ব্যথা হয়, তবে অনেক সময় ঠান্ডা পানিতে ব্যথা না বেড়ে বরং কমে যায়।

ঠান্ডায় দাঁতের সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়
দাঁতে সাধারণত কোনো সমস্যা না থাকলেও শীতে হঠাৎ করে দাঁতের সমস্যা শুরু হলে তা থেকে উত্তরণের জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

  • দাঁত মাজার ক্ষেত্রে শক্ত ব্রাশের পরিবর্তে নরম ব্রাশ ব্যবহার করা।
  • দাঁতের দাগ দূর করতে পারে এ রকম টুথপেস্ট ব্যবহার বাদ দেওয়া। পাশাপাশি দাগ তোলার জন্য বিভিন্ন উপাদান, যেমন অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড বা ক্যালসিয়াম পাইরোফসফেট আছে এ রকম টুথপেস্ট ব্যবহার না করা। মোড়কে উপাদানের নামের তালিকা দেখে কিনতে হবে টুথপেস্ট।
  • সংবেদনশীল বা ‘সেনসিটিভি’ দাঁতের জন্য তৈরি বিশেষ টুথপেস্ট বাজারে পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করতে হবে।
  • দাঁত জোরে মাজার দরকার নেই। সাধারণভাবে ঘষেই দাঁত পরিষ্কার করুন।
  • অনেকের মাড়ি খোঁচানোর অভ্যাস থাকে। এ রকম অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি রাতে ঘুমানোর সময় ‘মাউথগার্ড’ ব্যবহার করতে হবে।
  • দাঁতের সংবেদনশীলতা বাড়ায় এ রকম খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। যেমন ভিনেগারে চুবানো খাবার, ফল, জুস, আইসক্রিম ও কোমল পানীয়। জীবনযাত্রার মান এভাবে পরিবর্তন করার পরও সমস্যার সমাধান না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. পূজা সাহা, ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

ওজন কমাতে অনুপ্রেরণা ধরে রাখবেন যেভাবে

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত

প্রতিস্থাপনে শূকরের অঙ্গ একদিন মানব অঙ্গের চেয়ে উন্নত হতে পারে: বিশেষজ্ঞ

এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

গলা ও বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা: কেন হয় এবং প্রতিরোধে করণীয়

যেসব তথ্যে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না

মনমেজাজ ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার জরুরি

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে করণীয়

সাইনাসের সংক্রমণে চোখ ব্যথায় করণীয়