হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

একটি বস্তু দুটি দেখছেন কি

মো. আরমান বিন আজিজ মজুমদার

আমাদের দুই চোখ একটি বস্তুর ত্রিমাত্রিক ছবি মস্তিষ্কে উপস্থাপন করে। সেভাবেই আমরা দেখি এবং এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ কেউ একটি বস্তুকে দুটি দেখেন। একে বলে ডিপ্লোপিয়া বা ডাবল ভিশন।

বিভিন্ন কারণে ডাবল ভিশন হতে পারে। এ সমস্যার জন্য চোখের ভেতরের পেশির ভারসাম্যহীনতা দায়ী। চোখের পেশিগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে কয়েকটি নির্দিষ্ট স্নায়ু আছে। যেমন অকুলোমটর নার্ভ, ট্রকলিয়ার নার্ভ, এবডুসেন্ট নার্ভ। এই স্নায়ুগুলো মস্তিষ্কের ভেতর থেকে এসে চোখের পেছন দিকে চক্ষুকোটরে (অরবিট) প্রবেশ করে এবং সবশেষে চোখের পেশিগুলোয় পৌঁছায়। মস্তিষ্ক বা চক্ষুকোটরে টিউমার, আঘাত, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের কারণে এসব স্নায়ুতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক, স্নায়ুরোগ মাল্টিপল স্কলেরোসিসের জন্যও স্নায়ুবৈকল্য দেখা দিতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা বা মায়াসথেনিয়া রোগেও পেশিগুলো আক্রান্ত হতে পারে। ডিপ্লোপিয়ার সঙ্গে চোখ ট্যারা, চোখ বা মাথাব্যথা, চোখের পাতা ঝুলে যাওয়া, চোখের নড়াচড়া সীমিত হয়ে আসা ইত্যাদি উপসর্গও থাকতে পারে। বয়স্কদের বেলায় হঠাৎ করেই ডিপ্লোপিয়া দেখা দেয়। একে অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।

যেসব পরীক্ষা করাতে হতে পারে
প্রথমত, একজন চক্ষুবিশেষজ্ঞের মাধ্যমে চোখ পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হতে হবে। রোগীর ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে। মস্তিষ্কের কারণগুলোর মধ্যে ব্রেইন টিউমার, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ, মস্তিষ্কের প্রদাহ অন্যতম। এ কারণগুলো চিহ্নিত করতে সিটি স্ক্যান বা এমআরআই ইত্যাদি পরীক্ষার সাহায্য নিতে হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত একজন নিউরোসার্জনের তত্ত্বাবধানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে। হরমোনের সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ দরকার।

দ্রুত ডিপ্লোপিয়ার চিকিৎসা না নিলে এ সমস্যা স্থায়ী হয়ে যেতে পারে। টিউমার, হরমোন, স্ট্রোক ইত্যাদি কারণে এ সমস্যা হলে সামান্য অবহেলাও জীবন সংশয়ের কারণ হতে পারে।

চশমা সম্পর্কে কিছু কথা

  • শিশুদের চশমা লাগলে কখনোই অবহেলা করবেন না। অবশ্যই একজন চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শে শিশুকে চশমা দিতে হবে।
  • শাকসবজি ও ছোট মাছ খেলে চশমার পাওয়ার কম বাড়ে বা বাড়ে না, এটি ভুল ধারণা। চশমার পাওয়ার যা বাড়ার, তা বাড়বেই। তবে শিশুর সঠিক বিকাশ ও পুষ্টির জন্য এগুলোর বিকল্প নেই। সময়মতো না খেলে এগুলোর অভাব থেকেই যাবে।
  • চশমা পরার সঙ্গে পাওয়ার বাড়া বা কমার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে চিকিৎসক চশমা পরার পরামর্শ দিলে তা নিয়মিত পরাটাই জরুরি।
  • একবার চশমা নিলে পাওয়ার বাড়তেই থাকে, এটিও ভুল ধারণা। চশমা নিন আর না-ই নিন, পাওয়ার যেটুকু বাড়ার, তা বাড়বেই।
  • ভুল চশমা পরলে চোখ, মাথাব্যথার সঙ্গে চোখ থেকে পানিও পড়তে পারে।
  • চশমা পরা বা না পরা নির্ভর করে নিজের ওপর। চশমা দিয়ে যদি দৃষ্টি ভালো হয়, তাহলে চশমা পরলে ভালো দেখবেন আর না পরলে দেখবেন না। পরুন আর না-ই পরুন, এতে চোখের কিছু আসে-যায় না, চোখ ‘খারাপ’ হয় না। তবে দেখার পাশাপাশি আনুষঙ্গিক কিছু সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
  • চশমার পাওয়ার বাড়লে মন খারাপ করার কিছু নেই। এটা জুতার মাপ বা সাইজ বাড়ার মতো বিষয়।

মো. আরমান বিন আজিজ মজুমদার, চক্ষুরোগ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ,সাবেক ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও প্রশিক্ষক, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চট্টগ্রাম

এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

গলা ও বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা: কেন হয় এবং প্রতিরোধে করণীয়

যেসব তথ্যে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না

মনমেজাজ ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার জরুরি

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে করণীয়

সাইনাসের সংক্রমণে চোখ ব্যথায় করণীয়

তরুণদের ডায়াবেটিস এক অশনিসংকেত

গলাব্যথার সবচেয়ে অবহেলিত কারণ টনসিলোফ্যারিঞ্জাইটিস

বিশ্ব হসপিস এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ার দিবসে পিসিএসবি’র বিশেষ আয়োজন