হোম > স্বাস্থ্য

রোজায় শারীরবৃত্তীয় আচরণ ও করণীয়

ডা. মো. বখতিয়ার

রোজার সময় হঠাৎ করে জীবনযাপনে পরিবর্তন হওয়ার কারণে দৈনন্দিন রুটিন ও শারীরবৃত্তীয় কিছু সমস্যা দেখা দেয়। দৈনন্দিন জীবনে আমরা যা খাই তা পুরোপুরি হজম হতে, পুষ্টি শোষণ করতে এবং কাজ করতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। আর যখন খাবার পুরোপুরি হজম হয়ে যায়, তখন আমাদের শরীর লিভার ও মাংসপেশিতে সঞ্চিত থাকা গ্লুকোজ থেকে শক্তি নেওয়ার চেষ্টা করে। মূলত আমাদের শারীরবৃত্তীয় কারণে যখন এই চর্বি ব্যয় হতে শুরু করে, তখন তা ওজন কমাতে সাহায্য করে, কোলেস্টেরলের মাত্রা ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। অনেক ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে শরীর কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং ঝিমুনি ভাব আসতে পারে। এ ছাড়া কারও কারও মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি ভাব বা নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে।

রোজার সময় প্রথম দিকে দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার কারণে বেশি ক্ষুধা লাগা, পিপাসা লাগা স্বাভাবিক ব্যাপার। তারপর অভ্যস্ত হয়ে উঠলে প্রথম দিকের সমস্যাগুলো এমনিতেই চলে যায় এবং ধীরে ধীরে শরীরে চর্বি গলে তা রক্তের শর্করায় পরিণত হয়। এ সময় দিনের বেলায় যেহেতু কিছুই খাওয়া বা পান করা যায় না, তাই ইফতারের পর অবশ্যই সেটার ঘাটতি পূরণের জন্য প্রচুর পানি পান  করতে হয়, যা পানিশূন্যতা রোধে সহায়ক; বিশেষ করে প্রচণ্ড গরমে ঘাম হয়ে শরীর থেকে পানি ও লবণ বের হয়ে যায়, যা শরীর দুর্বল করে দিতে পারে। তাই ইফতার, রাতের খাবার বা সাহ্‌রিতে পুষ্টি, প্রোটিন বা আমিষ, লবণ ও পানিসমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন।

রোজা অবস্থায় এক সপ্তাহ পরে শরীর ও মনে ভালো লাগা বা কাজকর্মে গতি আসার অনুভূতি দেখা দিলে ধরে নিতে হবে, রোজা আপনার শরীরের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে। প্রতিদিন অনেক বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে শরীর অনেক সময় কিছু কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। তবে রোজার সময় না খেয়ে থাকার কারণে শরীর অন্যান্য কাজের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। এটি শরীরের ক্ষত সারিয়ে তোলা বা সংক্রমণ এবং মুটিয়ে যাওয়া রোধ করে।

রোজার প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহ পরে কিছু করণীয় রয়েছে। এ সময়ে রোজার সঙ্গে শরীর পুরোপুরি মানিয়ে নেয়। এ সময় লিভার, কিডনি ও ত্বক একধরনের পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যায়। শরীর থেকে টক্সিন বের হয়ে যায়। সে জন্য চেহারায় একটা নতুন রূপ পায়। নতুনরূপে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তাদের পূর্ণ কর্মক্ষমতা ফিরে পায়। এ জন্য স্মৃতি ও মনোযোগ বাড়ে।

শরীরে ব্যথা-বেদনা হলে

  • রোজা পালন করার সময় হাঁটু ও কোমর ব্যথা এবং মাইগ্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বেশ অসুবিধায় পড়ে যান। তাঁদের জন্য বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।
  • যাঁরা পরিপাকতন্ত্রজনিত কিছু সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা ভাজাপোড়া ও ঝালজাতীয় খাবার বাদ দিন। এতে ব্যথা-বেদনা অনেক ক্ষেত্রে উপশম করা সম্ভব হবে।
  • রোজাকালীন নামাজ পড়ার সমস্যা হলে ফিজিওথেরাপি নিতে পারেন। তাতে অনেক বেশি কর্মক্ষম থাকবেন।
  • দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়ে সমস্যা বোধ করলে চেয়ারে বসেই নামাজ আদায় করুন।
  • রমজান মাসে ব্যথার ওষুধ সেবনে সতর্ক থাকুন। সারা দিন রোজা রাখায় ব্যথার ওষুধ পাকস্থলীর প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে অথবা শরীর দুর্বল করে দিতে পারে।
  • সাহ্‌রির আগে ও ইফতারের দুই ঘণ্টা আগে অথবা পরে ব্যায়াম করুন।
  • পরিমিত খাবার গ্রহণ করুন, ওজন কমে যাবে। বাড়তি ওজন কমে গেলে অসুখ ও ব্যথা থেকে ভালো থাকবেন।

লেখক: জনস্বাস্থ্যবিষয়ক লেখক ও গবেষক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খাজা বদরুদদোজা মডার্ন হাসপাতাল, গাজীপুর

এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৬৬.৫৭ শতাংশ

শীতে যেসব খাবার মন শান্ত রাখবে

পুরুষ বন্ধ্যত্ব: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শীতকালীন নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকবেন যেভাবে

রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে করণীয়

থাইরয়েড হরমোন কম থাকার লক্ষণ

ওষুধকে ফাঁকি দিতে মরার ভান করে ক্যানসার কোষ—গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য

সাধারণের স্বাস্থ্যসেবা: মিলিয়ে যাচ্ছে ‘সূর্যের হাসি’

ব্লাড ক্যানসার আর মরণব্যাধি নয়, জিন থেরাপিতে অভাবনীয় সাফল্য

অনেক গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক আর তেমন কাজ করছে না: গবেষণা