আমি ১৬ জুলাই থেকেই এই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম। ১৮ জুলাই ২০২৪। দেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রায় থমকে গিয়েছিল। কিন্তু সেদিনই রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আন্দোলনে নতুন গতি আনেন। বসুন্ধরা গেটসংলগ্ন যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়ক প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠে। আন্দোলন পায় নতুন গতি।
১৮ জুলাই সকাল ১০টায় এআইইউবির ফটকে জড়ো হই আমরা। স্লোগান দিয়ে মিছিল করি কুড়াতলী, কুড়িল, কাজীবাড়ি হয়ে যমুনা ফিউচার পার্ক পর্যন্ত। নর্থ সাউথ ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরাও স্লোগানে যোগ দেন। তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একত্রে স্লোগান দিই, ‘কোটা না মেধা? মেধা!’ ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে পারে না!’ মাঠে বক্তৃতা, প্রতিবাদ—সবই শান্তিপূর্ণ। দুপুর ১২টার দিকে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়, যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। বেলা দুইটার দিকে খবর পাই, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। ৪০-৫০ জন মিলে আমরা নতুন বাজারের দিকে রওনা দিই।
নর্দ্দা পার হওয়ার পর হঠাৎ আশপাশের গলি থেকে হামলা চালানো হয়। পদদলিত হয়ে আমি আহত হই, পরে গলিতে ঢুকে আবার মারধরের শিকার হই। সহপাঠীরা আমাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা করান।
ভাটারা হয়ে কুড়িলে ফিরে দেখি, পুরো এলাকা যেন যুদ্ধক্ষেত্র। পুলিশ গুলি ছুড়ছে, চারপাশে আতঙ্ক। বন্ধুরা আমাকে কুড়িলের গলি থেকে নিরাপদে বের করে সামাউনের বাসায় আশ্রয় দেয়।
বন্ধুদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে ভেঙে না পড়ে বরং আরও দৃঢ় হই। সাংবাদিকদের জানাই, শিক্ষকেরা খোঁজ নেন। বিকেলে বন্ধু নোমান বাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হলে আমি ও হামিম ঝুঁকি নিয়ে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করি।