হোম > শিক্ষা

পাস করার সহজ কৌশল

অনেকের ধারণা, বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অনেক কঠিন হয়। প্রিলিতে কোনো রকম পাস করা গেলেও লিখিত পরীক্ষায় তা সহজ নয়! আমি এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করি। আমার মতে, প্রিলিতে পাস করাটা তুলনামূলক কিছুটা কঠিন লিখিত পরীক্ষার চেয়ে। আর লিখিত পরীক্ষায় পাস করাটা তুলনামূলক সহজ প্রিলির চেয়ে। কারণ, পিএসসি প্রিলিতে পাস করায় কম, কিন্তু লিখিততে ফেল করায় কম। অর্থাৎ, প্রিলির তুলনায় লিখিততে অনেক গুণ বেশি পাস করে। বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পাস করার সহজ উপায় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ৩৫তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডার প্রাপ্ত গাজী মিজানুর রহমান

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সহজে পাস করতে যা যা পড়তে হবে, তা নিচে তুলে ধরা হলো–

  • লিখিত পরীক্ষার জন্য আগে বিগত সালের প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়ুন, বিশেষ করে ৩৫তম-৪১তম পর্যন্ত (৪২তম বিসিএসে লিখিত ছিল না)। কারণ, এগুলো নতুন সিলেবাসের আলোকে নতুন প্যাটার্নের প্রশ্ন।
  • অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২২-এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পড়ুন রেফারেন্স দেওয়ার জন্য, দৈনিক পত্রিকা পড়ুন বিশেষত সম্পাদকীয়। এতে আপনার বেশি মার্কস পেতে সহায়তা করবে।
  • অনেকে সংবিধানের অনুচ্ছেদ পড়ার কথা শুনলেই ভয় পান। ভয়ের কিছু নেই। সংবিধানের অনুচ্ছেদ হুবহু লিখতে হয় না। কেবল মূল বিষয়টি অনুচ্ছেদ নম্বর ঠিক রেখে নিজের মতো করে লিখলেই হয়। বাংলাদেশের সংবিধানের সব অনুচ্ছেদ পড়ে মাথা নষ্ট না করে গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদগুলো পড়ুন। এ ক্ষেত্রে সংবিধানসংক্রান্ত বিগত সালের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো দেখে নিন। কারণ, বিগত সালের প্রশ্ন বেশি রিপিট হয়। সংবিধানের জন্য আরিফ খানের সহজ ভাষায় সংবিধান বইটি পড়তে পারেন।
  • বাংলাদেশ বিষয়াবলির প্রস্তুতির জন্য আপনার প্রিলির প্রস্তুতি অনেক সাহায্য করবে। বিগত সালের প্রশ্ন দেখে স্পষ্ট ধারণা নিন। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুসংশ্লিষ্ট প্রশ্নের ওপর বেশি জোর দিন। বাংলাদেশ বিষয়াবলির জন্য প্রফেসর মোজাম্মেল হকের একাদশ শ্রেণির পৌরনীতি বইগুলো (বিশেষত দ্বিতীয় পত্র) ব্যাপক কাজে দেবে। সঙ্গে ড. আবু মো. দেলোয়ার স্যারের ‘বাংলাদেশের ইতিহাস’ বইটি রাখতে পারেন (যা ভাইভাতেও কাজে দেবে)।
  • আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির জন্য বিগত সালের প্রশ্ন ধরে ধরে পড়ার পাশাপাশি একই ধাঁচের কাছাকাছি প্রশ্ন থেকে বেশ কমন পাওয়া যায়। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর ওপর জোর দিন। পাশাপাশি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী সম্পর্কের কারণগুলো জেনে নিন। ইসরায়েল-আরবের নতুন সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত জেনে নিন। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির জন্য শাহ মো. আবদুল হাই-এর ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সংগঠন ও পররাষ্ট্রনীতি’ বইটি সঙ্গে রাখতে পারেন।

বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন ইতিমধ্যে ৪৩তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করেছে। ৪৩তম বিসিএসের আবশ্যিক বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা আগের সময়সূচি অনুযায়ী ২৪ জুলাই শুরু হবে, চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। সেই হিসেবে হাতে খুব একটা সময় নেই।

  • বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিগত সালের লিখিত পরীক্ষা থেকে রিপিট হয় অনেক বেশি। তাই বিগত সালের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রশ্নের ওপর বেশি জোর দিন। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির জন্য ওরাকল বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বইটি অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে। সঙ্গে প্রকৌশলী মুজিবুর রহমানের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির আইসিটি বইটি পড়লে তথ্য ও প্রযুক্তি অংশে ভালো সাপোর্ট পাবেন।
  • ইংরেজিতে ভালো করার জন্য রিডিং স্কিল ও ফ্রি হ্যান্ড রাইটিংয়ের ওপর জোর দিন। ইংরেজি ট্রান্সলেশনের জন্য ‘Saifur's Translation and Writing’ বইটি আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। সঙ্গে বেসিক বই হিসেবে PC Das-এর Applied English Grammar and Composition বই ভালো সাপোর্ট দেবে ইংরেজির ক্ষেত্রে। ইংরেজিতে বেসিক বেশি দুর্বল হলে আগে ‘BCS Preliminary Analysis’ বইয়ের grammar অংশে ভালোভাবে শেষ করে নিলে বেশি উপকৃত হবেন। আর কোনো শব্দ পড়ার সময় শব্দের বিভিন্ন রূপ তথা Parts of Speech বা Word formation জেনে নিন।
  • গণিত জন্য প্রফেসর'স লিখিত গণিত বই বা ওরাকল লিখিত গণিত বই এবং ৯ম-১০ম শ্রেণির গণিত বই থেকে প্র্যাকটিস করলে ভালো করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সূত্র জানা থাকলে সহজে ভালো করা যায়।
  • মানসিক দক্ষতার জন্য খুব বেশি পড়তে হয় না। কেবল বিগত সালের বিসিএস লিখিত ও অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করলেই হয়ে যায়।
  •  প্রিলির জন্য বাংলা যা পড়েছেন, তা বাংলা প্রথম পত্রে অনেক বেশি হেল্প করবে। দ্বিতীয় পত্রের জন্য বিগত সালের প্রশ্ন অনুযায়ী প্রস্তুতি নিন। গ্রন্থ সমালোচনা জন্য কেবল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি বই, ভাষা-আন্দোলনভিত্তিক একটি বই ও বঙ্গবন্ধুর একটি বইয়ের গ্রন্থ সমালোচনা জানলে হবে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি গ্রন্থ সমালোচনা পড়ে নিলেই হয়। বাংলার জন্য প্রফেসর'স লিখিত বাংলা বইটির পাশাপাশি ‘শীকর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’ বইটি বা ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা’ বইটি পড়ে দেখতে পারেন।
  • আরেকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য যে বিসিএস লিখিত তথ্য-উপাত্ত প্রদানের ক্ষেত্রে যত বেশি গ্রাফ-চার্ট দেওয়া যায় তত বেশি নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং তথ্য-উপাত্ত প্রদানের ক্ষেত্রে সেই তথ্য-উপাত্তের সূত্র তথা সোর্স উল্লেখ করবেন।
  • আর যাঁদের হাতের লেখা খারাপ বলে চিন্তায় আছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, চাকরির পরীক্ষায় আপনাদের লেখা সুন্দর নাকি অসুন্দর সেটা মুখ্য বিষয় নয়; মুখ্য বিষয় হলো, আপনি কতটুকু কী লিখছেন সেটাই। আপনার যা খাতায় লিখেছেন তা পরীক্ষক সহজে বোঝাতে পারলেই হবে। 

একটি বিষয় মনে রাখবেন, 
আপনি যদি কোনোভাবে বিসিএস প্রিলিটা পাস করতে পারেন তাহলে লিখিত ও ভাইভাতে যদি ভালো নম্বর পান তাহলে ক্যাডার নিশ্চিত! আর যদি লিখিত ও ভাইভাতে Average নম্বরও পান তাহলে নন-ক্যাডারের মাধ্যমে সরকারি ফার্স্ট ক্লাস বা সেকেন্ড ক্লাস একটি ভালো চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে কোনো প্রকার ঘুষ-তদবির ছাড়াই!

স্বামীর পর স্ত্রীও পেলেন আচার্য স্বর্ণপদক

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রিয়ায় টিউশন ফি নেই

শান্তর লেন্সে প্রাণপ্রকৃতি

আইইউবিএটিতে ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫

ব্যাংকে ব্যবহৃত ১০টি ইংরেজি বাক্য (পর্ব-২)

কানাডার ইউনিভার্সিটি অব গুয়েলফ প্রেসিডেন্টস বৃত্তি

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: ঢাবির কলা অনুষদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: ‘স্কুলিং কাঠামো’ বাতিল চাইল তিতুমীর শিক্ষার্থীদের একাংশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা: লিখিত অংশে চাই বাড়তি গুরুত্ব

কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি