চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ডি-১ উপ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও উত্তীর্ণের তালিকায় এসেছে এক পরীক্ষার্থীর নাম। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনার। কিন্তু এই ভুলের দায় নিচ্ছেন না কেউই।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ নভেম্বর বিকেলে ডি-১ উপ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ৬ নভেম্বর রাতে উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। যেখানে ৪৯২৫৬১ ক্রমিকটি উত্তীর্ণদের তালিকায় আছে। তবে এই ক্রমিক নম্বরধারী প্রার্থী আফসারা তাসনিয়া ওই পরীক্ষায় অংশই নেননি। গত বুধবার (১৭ নভেম্বর) প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দেওয়ার জন্য একটি খুদে বার্তা পাঠানো হয় তাকে। এরপর বিষয়টি ওই প্রার্থীর জানতে পারেন।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ডি-১ উপ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার হলে একজন পরীক্ষার্থীকে ওএমআর ফরমে দুইটি ঘর ভরাট করতে হয়। এর মধ্যে একটি রোল নম্বর অন্যটি অ্যাপ্লিকেশন আইডি নম্বর। পরীক্ষার হলে যিনি পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকেন তাঁকে পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র ও উপস্থিতির তালিকার সঙ্গে এই দুইটি নম্বর যাচাই করে পরিদর্শকের ঘরে সাক্ষর করতে হয়। পাশাপাশি পরিদর্শককেও সাক্ষর করার আগে ওএমআর ফরমে রোল নম্বরও লিখতে হয়। পরবর্তীতে এই দুইটি নম্বর কম্পিউটার রিড করে ফলাফল তৈরি করে। কিন্তু পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও আফসারা তাসনিয়া নামের এক শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ার ঘটনায় ওএমআর ফরমে রোল নম্বর ও অ্যাপ্লিকেশন নম্বর মিল ছিল না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত একজন বলেন, ‘রোল নম্বর ও অ্যাপ্লিকেশন আইডি নম্বর যদি না মিলে, তাহলে কম্পিউটারে সেই ফরম রিজেক্ট হওয়ার কথা। অথবা দুইটি যে দুজনের তাও কম্পিউটার ধরে ফেলার কথা। কিন্তু এটা কীভাবে কম্পিউটার রিড করল, তা তো বোধগম্য হচ্ছে না।’
এদিকে দুই নম্বর দুই রকম হওয়ার পরও ফলাফল কীভাবে আসলো, তার দায় নিচ্ছেন না কেউ। একে অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।
ডি-১ উপ ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, যে মেয়ে শিক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে, এটি তাঁর পরের রোল নম্বরধারী ছেলের ভুলের কারণে হয়েছে। আরিফুল ইসলাম নামের ওই ছেলে রোল নম্বরের ঘরে ৪৯২৫৬২ এর পরিবর্তে ৪৯২৫৬১ পূরণ করেছে। কোনো কারণে যিনি পরিদর্শক ছিলেন তিনি সেটা লক্ষ্য করেননি। তবে অ্যাপ্লিকেশন নম্বর দুই রকম হওয়া সত্ত্বেও কম্পিউটার কীভাবে রিড করল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা সেন্ট্রাল প্রোগ্রামিং এর ভুল হতে পারে।’
এ দিকে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা তদন্তে এখনো কোনো কমিটি গঠন করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে ভুলের পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটা ডিজকোয়ালিফাইড ছেলের জন্য এত কথা বলার কি দরকার বলো। একটা শিক্ষার্থী তার রোল নম্বরটা ঠিকমতো লিখতে পারে না, সে বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে টিকবে?’
এ বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এটার জন্য মিটিং ডাকব। ওই পরিদর্শককে শোকজ করব।’