ফসল উৎপাদনে জমিতে পরিমিত ও লাভজনক মাত্রায় সুষম সার ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকেরা। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘সার নীতি সংলাপ’ অনুষ্ঠানে গবেষকেরা এই আহ্বান জানান। এ সময় কৃষককে সুষম সারের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করার পরামর্শ দেন সার নীতি সংলাপের প্যানেল আলোচকেরা।
গবেষকেরা জানান, সুষম সার ব্যবহারে শতকরা ৮ থেকে ১৪ ভাগ ফসল উৎপাদন বাড়ে এবং এতে বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। তাঁরা বলেন, ‘প্রতি বছর সার বাবদ সরকার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। সারের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য বৃদ্ধিতে এ খাতে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।’
সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমিয়ে আনতে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ইউরিয়া ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। আবার ডিএপি ব্যবহারও বাড়ছে। এতে সারের অপচয় হচ্ছে এবং সরকারের সার আমদানির খরচও বাড়ছে।’
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রকল্প লিডার রিচার্ড ডব্লিউ বেল বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সুপারিশসহ সুষম সার ব্যবহারে কৃষকেরা কতটুকু সুফল পেতে পারে, এর একটি চিত্র তুলে ধরেন। তাঁর উপস্থাপনায় উঠে আসে কৃষকেরা সুষম সার ব্যবহার করলে বছরে ধান উৎপাদন বেশি হবে ৭৫ লাখ টন। সার্বিকভাবে বছরে লাভ হবে ২০ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা।
বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়নে কৃষকদের সুষম সারের ব্যবহার বাড়াতে এবং সচেতন করার ওপর জোর দিতে বলেন কৃষি উন্নয়নে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ারের সভাপতিত্বে প্যানেল ডিসকাশনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লুৎফুল হাসান, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিফ) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার।