খালিস্তান আন্দোলনের অন্যতম নেতা হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের জেরে প্রায় আড়াই বছর আগে তলানিতে পৌঁছেছিল ভারত-কানডা সম্পর্ক। তবে কূটনৈতিক বিরোধ কাটিয়ে প্রধান বাণিজ্য অংশীদার ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে অটোয়া। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে বৈঠকের পর এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন কানাডার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী মানিন্দর সিধু।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে সিধু বলেছেন, ‘ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা যৌথভাবে কাজের সুযোগগুলো নিয়ে কথা বলেছি—বিমান ও মহাকাশ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), জ্বালানি, কৃষি, গুরুত্বপূর্ণ খনিজসহ বিভিন্ন খাতে আরও কীভাবে সহযোগিতা বাড়ানো যায়, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।’
তিন দিনের সফরে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন সিধু। তাঁর এই সফরকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০২৩ সালের জুনে ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে নিহত হন খালিস্তান আন্দোলনের অন্যতম নেতা হারদীপ সিং নিজ্জার। কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির সরকার ওই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত। তবে ভারত ট্রুডোর অভিযোগ অস্বীকার করে।
কিন্তু ট্রুডোর মন্তব্যের জেরে ভারত-কানাডা উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। দুই দেশ একে অপরের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে এবং ভারত কানাডায় ভিসা পরিষেবাও স্থগিত করে দেয়।
তবে এ বছরের শুরুতে ক্ষমতায় আসার পর কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সম্পর্ক পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেন। জুনে আলবার্টা প্রদেশে জি-৭ সম্মেলনের ফাঁকে কার্নি ও মোদির মধ্যে বৈঠক হয়।
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, ওই বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আইনের শাসন এবং সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা নীতির ওপর ভিত্তি করে কানাডা-ভারত সম্পর্কের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দুই নেতা নতুন হাইকমিশনার নিয়োগে সম্মত হয়েছেন, যাতে নাগরিক ও ব্যবসা উভয় ক্ষেত্রেই নিয়মিত সেবা পুনরায় চালু করা যায়।
এদিকে, দিল্লিতে আজকের বৈঠকটি এমন এক সময়ে হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কনীতির কারণে ভারত ও কানাডা উভয় দেশই অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখোমুখি।