হোম > সারা দেশ > ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ের স্কুল পড়ুয়া শিশুরা শ্রমিকের কাজে ঝুঁকে পড়ছে

প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও

যে বয়সে স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করার কথা, সেই বয়স থেকে তাদের ধরতে হচ্ছে সংসারের হাল। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুনসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের শিশুদের অবস্থা এখন এমনই। গ্রামের শিশুরা স্কুল বন্ধ থাকায় করছে শ্রমিকের কাজ। 

গ্রামের সেন্টার হাট বিপি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শ্রী সুজন সরকার। সে অন্যের জমিতে কৃষিশ্রমিকের কাজ করে। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় প্রায় দেড় বছর ধরেই বিভিন্ন কাজ করে সংসারের জন্য আয় করছে। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার ছোট বোন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। বাবা মহাদেব সরকার দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বাবা। তাই মা, বাবা ও এক বোনকে নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদেই কৃষিশ্রমিকের কাজ করতে হয় তাকে। কিন্তু সুজনের ইচ্ছে ডাক্তার হবে। পড়ালেখা ও সংসারের খরচ চালাতে গিয়ে শ্রমিকের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সে। 

সুজনের সঙ্গে জমিনে বীজতলার কাজ করছে রাফসান নামে আরও একজন। সে জানায়, তার বাবাও দিনমজুরের কাজ করেন। সে এলাকার শাপলা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। তার ইচ্ছা শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু সংসারের অর্থের জোগান দিতে পরিবারের সদস্যরাই তাদের এ কাজে পাঠিয়েছে। 

স্কুলপড়ুয়া ফারুক, কবির, সাদেকুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তারা রাজমিস্ত্রির কাজে জোগালি দেয়। এর মধ্যে দুপুরে ২০ মিনিট খাবারের সময় পায়। নির্দিষ্ট এই সময়ের মধ্যে বাড়ি থেকে খেয়ে আসতে হয়। দীর্ঘক্ষণ এই শ্রমের বিনিময়ে দিন শেষে তাদের প্রাপ্তি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। 

ফারুক ও কবির যে বিল্ডিংয়ে কাজ করছিল, সেখানে ফারুকের মা আফরোজা বেগম বলেন, `ঢাকায় রংমিস্ত্রির কাজ করত তার বাবা। করোনায় সেই কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়িতে সে এখন বসে থাকে। তাই বাচ্চাটারে কাজে লাগিয়ে দিয়েছি। দুটো পয়সা পেলে তো সংসারটা কোনো রকম চলে।'

প্রফেসর মনতোষ কুমার দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, একদিকে করোনার কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, অন্যদিকে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর রোজগার কমে আসায় এসব শিশু শ্রমিকের কাজে লেগে পড়েছে। দরিদ্র পরিবারগুলো অভাবের তাড়নায় শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে পাঠায়। যদিও শিশুশ্রম আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়, কিন্তু কোভিড-১৯–এর কারণে শিশুশ্রম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করেন তিনি। 

শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেন ট্রান্সপোর্ট জেলা শাখার প্রতিনিধি হাসনা হেনা বলেন, শিশুদের ঝরে পড়া রোধে এবং শ্রমিকের কাজ থেকে বিরত রাখতে কাউনসেলিং করছেন তাঁদের অভিভাবকদের। যাতে এসব অভিভাবক স্কুল খোলার পরপরই তাঁদের শিশুদের স্কুলে পাঠাতে উৎসাহ পান। না হলে শিশুদের দিয়ে শ্রমের কাজ করার পর অভিভাবকদের অনাগ্রহ তৈরি হবে তাদের স্কুল পাঠাতে। পাশাপাশি প্রশাসন ও সচেতন মহলকে শিশুশ্রম রোধে নজরদারি বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি। 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শিশুদের দিয়ে শ্রমের কাজ করাচ্ছে, তাদের বিষয়ে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে দারিদ্র্যপূর্ণ পরিবারগুলোতে আর্থিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে, যেসব পরিবারে জনসংখ্যা বেশি রয়েছে তাদের বিশেষ প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসার জন্য। 

সার নিয়ে ক্ষোভে ‘কৃষকের’ ঘুষিতে দাঁত ভাঙল কর্মকর্তার, থানায় মামলা

ঠাকুরগাঁও-১, ২ ও ৩: এলোমেলো বিএনপি গোছানো জামায়াত

সম্পত্তির বিরোধে বাবার লাশ আটকে রাখল ছেলে, ২৩ ঘণ্টা পর দাফন

ঠাকুরগাঁও চিনিকলে চার দফা দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ

ঠাকুরগাঁওয়ে বাউলশিল্পীদের ওপর হামলা, তিনজন হাসপাতালে

বাউলদের ওপর হামলা উগ্র ধর্মান্ধদের কাজ: মির্জা ফখরুল

চলন্ত ট্রেনে ফেরিওয়ালা খুন: সিরাজগঞ্জ ও দিনাজপুর থেকে ৪ আসামি গ্রেপ্তার

পীরগঞ্জে ট্রেনে দুই হকারের মারামারি, ছুরিকাঘাতে একজনের মৃত্যু

ইউএনওর আইডি বিড়ম্বনায় জন্মনিবন্ধনের কাজ বন্ধ, ভোগান্তিতে সেবাগ্রহীতারা

হাসিনার রায়ের প্রতিবাদে মিছিল, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ১৮ নেতা-কর্মীর নামে মামলা