সিলেট: সিলেটের বন্দর বাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ বুধবার দুপুরে আদালত পুলিশের কাছে ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আওলাদ হোসেন।
অভিযুক্তরা হলেন- বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদ ও ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবকারী কথিত সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমান। এদের মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে থাকলেও নোমান এখনো পলাতক।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা প্রায় ১ হাজার ৯০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এখন করোনার কারণে আদালত বন্ধ, ভার্চুয়াল আদালতে সীমিত কার্যক্রম চলছে। পুরোদমে চালু হলে তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
সিলেট পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার খালেদ-উজ-জামান জানান, দীর্ঘ ছয় মাসেরও বেশি সময় তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে। আলোচিত এ মামলাটির আসামি পুলিশ হওয়ায় একটি ত্রুটিমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য চার্জশিট তৈরি করতে কিছুটা সময় লেগেছে। তবে আসামিদের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে বলে আশা করেন তিনি।
গত বছরের ১১ অক্টোবর ভোরে সিলেট নগরীর আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করেন ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা। পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যু ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবিতে চলে নানা কর্মসূচি। রায়হানের মৃত্যুর পরদিন ১২ অক্টোবর তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
একটু দেরিতে হলেও মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেয়ায় খুশি রায়হানের মা সালমা বেগম। তিনি বলেন, ‘কারা রায়হানকে পিটিয়ে, নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে তা স্পষ্ট। পুলিশ হেফাজতে এমন মৃত্যু কারো কাম্য নয়। এ ঘটনায় জড়িত সব আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’