সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) শিক্ষার্থীদের একটি ব্যাচের ভ্রমণে যাওয়াকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সিকৃবি শিক্ষার্থী ও প্রশাসন বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা তাঁদের আসন্ন ব্যাচ ট্যুর নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনার একপর্যায়ে কথা-কাটাকাটির জের ধরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষকে পূর্বপরিকল্পিত বলে একে অপরকে দোষারোপ করে দুই পক্ষ। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কতিপয় ছাত্রনেতা পরিস্থিতি সামাল দিতে এসে ছাত্রদের আরও উসকে দেয়। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনকে চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়, বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ জমেছে। আর বর্তমান আংশিক কমিটির একটি পক্ষ নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি চাইছে না। এসব নিয়ে বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। এসবের জেরে একটি অনুষদের ট্যুরবিষয়ক মতবিরোধকে ইন্ধন জুগিয়ে সংঘর্ষে পরিণত করে এক পক্ষ সুবিধা নিতে চায় বলে মনে করছেন অনেকে।
এ ছাড়া ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করলেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যে প্রক্টর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার মাধ্যমে প্রথম দফার সংঘর্ষ শেষ হয়।
একপর্যায়ে প্রক্টরের আশ্বাসে এক পক্ষ হলে ফিরে যাওয়ার কথা বলেও হজরত শাহপরাণ হলের নিচে অবস্থান নেয়। অন্যপক্ষকে কিছুক্ষণ পরে হলে ফিরে যাওয়ার আদেশ দেন প্রক্টর। হলে আগ থেকেই অবস্থানকারী দলকে দেখে তাঁরা প্রবেশ করতে না চাইলেও প্রক্টর তাঁদের অভয় দিয়ে পুনরায় হলে ফিরতে বলেন। হলে প্রবেশের সময় প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক ও প্রভোস্টের সামনেই ছাত্রলীগের দুই পক্ষ দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম সোহাগ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাতে দুই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ট্যুরকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সোয়া ১২টায় খবর পেয়ে আমরা গিয়ে ২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। বর্তমানে পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। আমার জানামতে দুজন সামান্য আহত হয়েছে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় হেলথ সেন্টারে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। সাধারণ নেতা-কর্মীরাও চাইছে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি হোক। শিগগিরই সেটা হবে।’