সিলেট নগরীর একটি কনভেনশন হলের সামনে অনেক নারীর সমাগম। কেউ পোশাক কিনছেন, কেউ বিভিন্ন গয়না দেখছেন। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে এমন দৃশ্য দেখা গেছে নগরীর সুবিদবাজার এলাকার খান প্যালেস কনভেনশন হলে। বিভিন্ন বিপণিবিতান ও শপিংমলে ঈদের কেনাকাটা তেমন জমে না উঠলেও এখানে ভিড় দেখা গেছে নারী ক্রেতাদের।
ঈদকে সামনে খান প্যালেস কনভেনশন হলে তিন দিনব্যাপী ঈদ ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছেন উদ্যোক্তা নাজিয়া চৌধুরী ও নাফিস শামস তিয়াস। গত বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করা হয় এই আয়োজনের। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত চলে এই মেলা। আজ শনিবার একই সময় পর্যন্ত কেনাকাটা করা যাবে বলে জানান আয়োজক নাজিয়া চৌধুরী।
একইভাবে সিলেট নগরীর উপশহরের রোজ ভিউ হোটেলে ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বাতি ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ‘ঈদ ফেস্টিভ্যাল ফেয়ার’ নামে আরেকটি নারী উদ্যোক্তা মেলা। ১০,১১ ও ১২ এপ্রিল দুপুর ১২টা থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত চলবে মেলা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিশিষ্ট বিক্রেতারা এই মেলায় পণ্য বিক্রি করবেন বলে জানান আয়োজনের উদ্যোক্তা শ্রাবণী বিশ্বাস প্রিয়াংকা।
মেলা দুটিতে বিনা মূল্যে প্রবেশের সুযোগ রাখা হয়েছে। নারীদের পাশাপাশি পুরুষ ও শিশুদের পোশাক রয়েছে।
গতকাল রাতে নগরীর বালুচর এলাকা থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে সৈয়দা জেবুন্নেচ্ছা আসেন সুবিদবাজারস্থ খান প্যালেস কনভেনশন হলের মেলায়। তিনি বলেন, ‘মার্কেটের চেয়ে নারী উদ্যোক্তাদের মেলায় বেশি পণ্য থাকে। নারী উদ্যোক্তাদের পণ্যের গুণগতমান ভালো থাকে। মেলায় অনেক অনলাইন ব্যবসায়ী পণ্য নিয়ে আসেন। এখন আমরা মেয়েরা অনলাইন থেকে বেশি কেনাকাটা করি। তাই আমরা মেলায় বেশি আসতে চাই, কারণ অনলাইনের পণ্য সরাসরি দেখে কেনা যায়।’
ওই মেলায় আসা আরেক ক্রেতা তানহা ইসলাম বলেন, ‘নারী উদ্যোক্তাদের মেলায় এসেছি ঈদের কেনাকাটা করতে। মার্কেটের চেয়ে এখানে কেনাকাটা করতে ঝামেলা কম হয়। এখানে ভিড় আছে কিন্তু বিশৃঙ্খলা নেই। পাশাপাশি ছোটদের জন্য টেডি, টমসহ বিভিন্ন খেলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। খাবারের ব্যবস্থাও আছে। তাই মার্কেট ও শপিংমলের চেয়ে নারী উদ্যোক্তাদের মেলায় কেনাকাটা করতে বেশি পছন্দ করি।’
প্রতি বছরই দুই ঈদের আগে মেলার আয়োজন করা হয় বলে জানান আয়োজক নাজিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আগে দু-একজন নারী উদ্যোক্তা মেলার আয়োজন করতাম। এখন ঈদকে সামনে রেখে আরও অনেকে মেলার আয়োজন করছেন। এই মেলাগুলো নারী উদ্যোক্তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মেলায় পোশাক, গয়না, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন পণ্যের ৩৫টি স্টল আছে। হলের নিচতলায় খাবারের জন্য ১২টি রেস্টুরেন্ট আছে। গত মেলায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ পরিদর্শন করেছেন। আশা করি এবার আরও বেশি মানুষ আসবেন এবং চাহিদামতো পণ্য কিনে নিয়ে যাবেন।’