শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সুদে কয়েক দফায় ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রতন চন্দ্র পাঠক। সময়মতো সেই ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় এখন তাঁকে ১৫ লাখ টাকার মামলায় হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এর প্রতিকার চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই শিক্ষক শহরের উত্তর বাজারে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি উপজেলার বুরুঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
ভুক্তভোগী শিক্ষক রতন চন্দ্র পাঠক লিখিত বক্তব্যে বলেন, পৌরশহরের আড়াইআনী বাজার এলাকার দাদন ব্যবসায়ী হাসানুজ্জামান খোকনের কাছ থেকে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে মাসে শতকরা ১০ টাকা হারে সুদে ২০ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি। চাকরির খালি চেক বন্ধক রেখে নেওয়া ওই ঋণের পর তিনি আরও কয়েক দফায় ১ লাখ টাকার ঋণ নেন।
নিয়মিত সুদ না দেওয়ায় একপর্যায়ে ১ লাখ টাকা সুদ-আসলসহ বছর ঘুরে চার লাখে দাঁড়ায়। এ সময় ওই দাদন ব্যবসায়ী সুদের হার ১০ টাকা থেকে নামিয়ে ৬ টাকা নির্ধারণ করেন। কিন্তু ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সুদের টাকা দিতে না পারায় ২০২০ সালে তা ৮ লাখে পৌঁছায়। এ সময় ওই দাদন ব্যবসায়ীর দাবি করা সমুদয় টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ২০২০ সালের শেষদিকে আদালতে রতনের বিরুদ্ধে ১৫ লাখ টাকার চেক ডিজ-অনার মামলা করেন ওই দাদন ব্যবসায়ী। এর অনুকূলে ৫ অক্টোবর অগ্রণী ব্যাংক নালিতাবাড়ী শাখা থেকে সাদা চেকে ১৫ লাখ টাকার অঙ্ক বসিয়ে তা বাউন্স করানো হয়।
এদিকে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বিভিন্ন সময় দাদন ব্যবসায়ী হাসানুজ্জামান খোকনকে প্রায় ৪ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন বলে দাবি করেন রতন চন্দ্র পাঠক। তাঁর অভিযোগ, বন্ধকি চেকের পাতা শেষ হওয়ার পর দাদন ব্যবসায়ী খোকন ব্যাংক থেকে নতুন চেক বই উত্তোলন করেন। পরে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে খোকন তাঁর হিসাব থেকে দফায় দফায় চাকরির বেতনের টাকা উত্তোলন করেছেন। এ সময় তিনি তাঁর প্রকৃত স্বাক্ষর ও জালিয়াতি করা স্বাক্ষরও উপস্থাপন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাদন ব্যবসায়ীর হেনস্তা থেকে মুক্তি পেতে সহযোগিতা কামনা করেন।
আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসানুজ্জামান খোকন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। উল্টো সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন তিনি।