রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রদলের আংশিক কমিটি নিয়ে তীব্র বিতর্ক ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বেরোবি শাখা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতারা এই কমিটিকে ‘ছাত্রলীগের কমিটি’ বলে আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
নবগঠিত কমিটিতে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট বিতর্কিত ব্যক্তিদের জায়গা দেওয়া হয়েছে—এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতি দেন বেরোবি শাখা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান খান শ্রাবণ।
বিবৃতিতে মো. ইমরান খান শ্রাবণ দাবি করেন, ঘোষিত কমিটিতে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকের আস্থাভাজনদের স্থান দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি আমার জীবনের সোনালি সময় ছাত্রদলের জন্য উৎসর্গ করেছি। এই আবু সাঈদের রক্তে রঞ্জিত ক্যাম্পাসে ছাত্রদল প্রতিষ্ঠায় আমাদের অনেক রক্ত ঝরেছে। মামলা-হামলা, জেল-জুলুম সবকিছু সয়ে আমরা সংগঠনটিকে দাঁড় করিয়েছি। অথচ আজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হলো, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক।’
ইমরান খান আরও বলেন, যেখানে প্রতিষ্ঠাতা কমিটির সবাই জীবন বাজি রেখে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে লড়েছেন, সেখানে সেই ছাত্রলীগের ব্যক্তিদের ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান দেওয়া কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।
ইমরান খান শ্রাবণ কমিটিতে স্থান পাওয়া ব্যক্তিদের ছাত্রলীগ-সংশ্লিষ্টতার তথ্য তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দলীয় তদন্ত দাবি করেন। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে দাবি জানান, ‘কে এই কমিটি করল, কার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে, সবকিছুর বিচার করা হোক।’
এদিকে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক আল মুরসালিন মুন্নাও তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ জানিয়ে লিখেছেন, ‘ছাত্রলীগের কর্মী দিয়ে কমিটি! এ কেমন ছাত্রদলের কমিটি! এটি বেরোবি ছাত্রদলের ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায়। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘বেরোবিতে কি ছাত্রদলের কর্মীর অভাব পড়েছে?’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে ঘোষিত এই কমিটিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইয়ামিনকে সভাপতি এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. জহির রায়হানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৯ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠিত হয়েছে।