রংপুরে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে স্তন ক্যানসার। রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে গত পাঁচ মাসে অস্ত্রোপচার করা ২৬৭ জন ক্যানসারের রোগীর মধ্যে ১০২ জন স্তন ক্যানসারের রোগী। এ ক্যানসারে আক্রান্ত নারীরা সঠিক সময়ে চিকিৎসা করাতে না পেরে অনেকে মারা যাচ্ছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুর মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের আয়োজনে ক্যাম্পাসের লেকচার গ্যালারি-১-এ ‘স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এ তথ্য জানান।
রমেক হাসপাতারের সার্জারি বিভাগের কনসালট্যান্ট সামিহা তাসনিম মুনমুন সেমিনারে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি জানান, রংপুর রমেক হাসপাতালের ব্রেস্ট ক্লিনিকে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্তনের সমস্যা নিয়ে ১ হাজার ১৩৭ জন রোগী সেবা নিতে এসেছিলেন। এর মধ্যে ৫৪ জনের ব্রেস্ট ক্যানসার ধরা পড়েছে এবং এর মধ্যে ৪২ জন ব্রেস্ট ক্যানসারের তৃতীয় অথবা চতুর্থ পর্যায়ের রোগী।
সামিহা তাসনিম মুনমুন জানান, রমেক হাসপাতালে ক্যানসারে আক্রান্ত অস্ত্রোপচার করা ২৬৭ জন রোগীর মধ্যে রেক্টাম ক্যানসারে আক্রান্ত ১৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত ২১ দশমিক ৯ শতাংশ, স্ট্রোম্যাক ক্যানসারে আক্রান্ত ২৪ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত ৩৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। স্তন ক্যানসার রোধে স্ক্রিনিংসহ সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার ব্যাপারে তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয় সেমিনারে।
সেমিনারে রমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান, প্যাথলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান আকন্দ, মেডিসিন বিভাগের প্রধান মোখলেছুর রহমান সরকার, হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট শফিকুল ইসলাম, রমেকের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক নুর ইসলাম, সার্জারি বিভাগের সাবেক শিক্ষক জাবেদ আখতারসহ অন্যরা। রমেকের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন এতে সভাপতিত্ব করেন।
রমেক হাসপাতাল ইলেকট্রনিক ডেটা ট্র্যাকিংসহ জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং কর্মসূচির তথ্য সংগ্রহে সারা দেশে তৃতীয় স্থান অর্জন করায় সরকারিভাবে পুরস্কৃত হয়েছে বলে জানানো হয় সেমিনারে। এর আগে মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে একটি জনসচেতনতামূলক শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এরপর কলেজ প্রাঙ্গণে সচেতনতা দিবসের কেক কাটা হয়।