রংপুরের গঙ্গাচড়ায় আজ রোববার সকালে টানা বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ আঘাত হেনেছে এক স্বল্পস্থায়ী ঘূর্ণিঝড়। মাত্র কয়েক মিনিটের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপজেলার আলমবিদিতর এবং নোহালী ইউনিয়নে আট শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া আগাম আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুশিক্ষার্থীও রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃষ্টির সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের আকস্মিক তাণ্ডবে টিনশেড ও আধা পাকা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে এবং অসংখ্য গাছপালা উপড়ে যায়। যদি ঝড় আরও বেশি সময় স্থায়ী হতো, তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক গুণ বেশি হতে পারত বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
নাজমুল আমিন (৩৫) নামের আলমবিদিতর ইউনিয়নের কুতুব হাজীরহাটের এক বাসিন্দা বলেন, ‘হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে আমার পাকা ঘর ভেঙে গেছে। ঘরের টিন উড়ে গেছে। আমার ছেলে মাফি, যে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী; তার মাথা ফেটেছে ও পা ভেঙেছে। তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি।’
নোহালী ইউনিয়নের সরদারপাড়ার বাসিন্দা ফনি বেওয়া (৪০) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বাপের দুইটা ঘর মোর, দুইটায় উড়ি গেইছে। এলা কোটে থাকং মুই (বাবার দুটি ঘর ছিল, দুটিই উড়ে গেছে। এখন কোথায় থাকব আমি)!’
নোহালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফ আলী জানান, তাঁর ইউনিয়নে প্রায় ৪০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি বিষয়টি দ্রুত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
আলমবিদিতর ইউনিয়নের প্রশাসক ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আফতাবুজ্জামান চয়ন জানান, তাঁদের ইউনিয়নেও প্রায় ৩০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ইতিমধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আহতদের সুচিকিৎসা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বাড়িঘর সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।