‘আমার ছেলে ছোট থেকেই মেধাবী, নম্র, ভদ্র স্বভাবের। ক্লাসের প্রত্যেক পরীক্ষায় প্রথম হতো। কোনো দিন কিছু নিয়ে আমার সঙ্গে জেদ করেনি। লেখাপড়ার প্রতি ছিল তার খুবই মনোযোগ। স্বপ্ন ছিল ছেলেকে চিকিৎসক বানাব। কল্পনাও করতে পারছি না, আমার ছেলেটা এভাবে মারা যাবে। সে পরীক্ষার রেজাল্ট আনতে গিয়ে লাশ হয়ে ঘরে ফিরবে।’ ছেলেকে হারিয়ে এভাবেই বিলাপ করছিলেন ধ্রুবব্রত দাসের মা তমা রানী সিং।
আজ মঙ্গলবার গাইবান্ধা পৌর শহরের মধ্যপাড়ায় ধ্রুবব্রতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে তার মরদেহ আনা হয়েছে। ছেলের শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা। ধ্রুবকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় করেছেন আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীরা। সহপাঠীরা কান্নাকাটি করছেন।
ধ্রুবর মা বলেন, ‘গাইবান্ধা সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে “এ” প্লাস নিয়ে পাস করে ধ্রুব। ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করতে আমরা ঢাকা গিয়েছি। সেখানে নটর ডেম কলেজে তাকে ভর্তি করেছি। বিদ্যালয়ে বরাবরই ভালো রেজাল্ট করত সে। এবার ওই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।’ তিনি বলেন, ‘সোমবার (১২ মে) বাবার সঙ্গে টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্টের কার্ড আনতে গিয়ে আমার ছেলে লাশ হলো। আমার ছেলে ভবন থেকে পড়ে গেছে না কি ষড়যন্ত্র করে ফেলে দেওয়া হয়েছে, সেটি অজানা।’
গাইবান্ধা শহরের মধ্যপাড়ার বাণীব্রত দাস চঞ্চলের ছেলে ধ্রুবব্রত দাস গতকাল বেলা ৩টার দিকে ঢাকার মতিঝিলে নটর ডেম কলেজের ভবন থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ধ্রুবব্রত দাসের স্বজন সঞ্জিত রায় মুক্তি বলেন, ‘ধ্রুবকে তার বাবা কলেজে নিয়ে যেতেন, ক্লাস শেষে আবার নিয়ে আসতেন। অন্য ছেলেদের থেকে সে আলাদা। পড়ালেখা ছাড়া অন্য কিছু সে করত না।’