নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের সংবাদ প্রকাশের জেরে রাজশাহীর তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার সকালে নগরীর কাদিরগঞ্জে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করে অংশ নেয় রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী জেলা শাখা, রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ, রাজশাহী সুশিক্ষা আন্দোলন মঞ্চসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
কর্মসূচিতে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ‘২০০৮ সালে শাহরিয়ার আলম রাজনীতিতে আসার শুরুতে আমি নিজে তাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি। তাঁকে নিয়ে ঢাকায় মিডিয়া অফিসগুলোতে গিয়েছি। তাঁর জন্য সহায়তা চেয়েছি। সাংবাদিকেরা সহযোগিতা করেছেন বলে তিনি এমপি-প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন।’
সুশিক্ষা আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, ‘২০০৮ সালে শাহরিয়ার আলমের ছিল ২ কোটি টাকা। এখন তিনি ৮৯ কোটি টাকার মালিক। এত টাকা কোথায় পেলেন তার জবাব এবার দিতে হবে।’
বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য বদরুল হাসান লিটন বলেন, ‘২০০৭ সালে শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের সহযোগিতা নিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এখন তাঁর ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সাংবাদিকদের অপবাদ দিচ্ছেন।’
রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান শ্যামল বলেন, ‘শাহরিয়ার আলম ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে মিজানুর রহমান মিনুর কাছে গিয়েছিলেন। মিনু বলেছিলেন, “তোমার বয়স কম।” তারপর বাইন মাছের মতো এসে ভিড়েন আওয়ামী লীগে।’
বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী জেলার সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘ নানা অপকর্মের কারণেই জনগণ তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই সাংবাদিক হয়রানি করবেন না। তা না হলে আরও নিউজ হবে।’
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন আরইউজের সভাপতি রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা এই সরকারের সঙ্গে আছি। কিন্তু শাহরিয়ার আলমের মতো লোকের সঙ্গে নেই।’
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পরিচালনা করেন আরইউজের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক। কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সুজাউদ্দিন ছোটন, রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, শাহরিয়ার আলম রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হকের সমর্থক মেরাজুল ইসলাম রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন যে, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তাঁকে হুমকি দিয়েছেন। লিখিত এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। তবে সংবাদ মিথ্যা দাবি করে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সহকারী একান্ত সচিব সিরাজুল ইসলাম রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবের কাছে আজকের পত্রিকা, প্রথম আলো ও কালের কণ্ঠের স্থানীয় প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।