সত্তরোর্ধ্ব সফুরা বিবি ও সাজেদা খাতুন কোনোভাবেই টিকা নেবেন না। তাঁদের ধারণা, করোনার টিকা নিলে মানুষ মারা যায়। কিন্তু তাঁদের দেখভাল করা যুবক মানিক রহমানও ছাড়বেন না। দুই নারীর দুই হাত একসঙ্গে বেঁধে তিনি জোর করে তাঁদের এনেছিলেন টিকা কেন্দ্রে।
তারপর তাঁদের করোনার প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরের পর রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই দুই নারী ভিক্ষাবৃত্তি করেন। গ্রামে গ্রামে ঘুরে তাঁরা শুনেছিলেন, করোনার টিকা নিলে মানুষ মারা যায়।
মানিক রহমান জানান, এই দুই নারীর কেউ নেই। প্রতিবেশী হিসেবে তিনিই খোঁজখবর রাখেন। গ্রামের সব মানুষ টিকা নিতে কেন্দ্রে যাচ্ছে দেখে সফুরা ও সাজেদা পালিয়েছিলেন। তিনি তাঁদের ধরে আনেন। কিন্তু ভ্যানে ওঠার পর সফুরা পালানোর চেষ্টা করেন। এতে মাথায় আঘাত পান।
বাধ্য হয়ে একটি কাপড় দিয়ে দুজনের হাত একসঙ্গে বাঁধেন। তখনো জোর করে টিকা না দেওয়ার মিনতি জানাচ্ছেন সফুরা ও সাজেদা। পরে তাঁরা যখন দেখেন গ্রামের অন্যরাও টিকা নিচ্ছেন, তখন তাঁরা টিকা নিতে রাজি হন। টিকা নেওয়ার পর তাঁরা ভালোই আছেন বলে জানান মানিক।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার জানান, এ ধরনের কোনো ঘটনা তাঁর জানা নেই। কিছু কিছু জায়গায় গুজব থাকলেও গ্রামের মানুষেরও টিকা নেওয়ার আগ্রহ বেড়েছে। সে কারণে ক্যাম্পেইনের প্রথম দিনই রাজশাহীর ৯ উপজেলায় ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। ফলে ছয় দিনের ক্যাম্পেই একদিনেই শেষ হয়ে গেছে। রোববার গ্রামে এ ক্যাম্পেইন চলেনি।