হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

পুঠিয়ায় সুদের ফাঁদে জিম্মি হাজারো পরিবার

প্রতিনিধি, (পুঠিয়া) রাজশাহী  

পুঠিয়ায় দুই শতাধিক সুদ ব্যবসায়ী চক্রাকারে জিম্মি হয়ে পড়েছেন হাজারো পরিবার।

এছাড়া মাঝারি সুদ ব্যবসায়ী আছে আরো পাঁচ শতাধিক। এ এলাকায় সবচেয়ে বেশী সুদের টাকা লেনদেন হয় ধোপাপাড়া বাজারে।

সুদ ব্যবসায়ীরা এলাকার সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমুজুর, প্রান্তিক কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের টার্গেট করছে। কেউ টাকা নিতে চাইলে জমির দলিল জমা রেখে সাদা স্ট্যাম্পে একটি চুক্তিপত্র করে। এরপর তারা স্ট্যাম্পে একাধিক স্বাক্ষর করিয়ে ইচ্ছেমত সুদের পরিমাণ লিখে ভুক্তভোগিদের জিম্মি করে রাখছে।

সুদ ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পরে গত কয়েক বছরে আত্মহত্যা করেছেন বানেশ্বর এলাকায় ২ জন, জিউপাড়া ও শিলমাড়িয়া এলাকায় ৫ জন। এছাড়া শেষ সম্বল ভিটেবাড়ি বিক্রি করে পথে বসেছে শতাধিক পরিবার।

আরিফুল ইসলাম নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ব্যবসার পরিধি বাড়াতে সুদের উপর ৫ লাখ টাকা নেয় আরিফুল ইসলাম। তিন বছরে ওই ৫ লাখ টাকার সুদ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। গত বছরের শুরুতে করোনা পরিস্থিতিতে তার ব্যবসায় চরম মন্দা শুরু হয়। যার কারণে তিনি সময়মত টাকা দিতে ব্যর্থ হন। সম্প্রতি ওই সুদ ব্যবসায়ী তার কাছে আরো ৩৬ লাখ টাকা দাবি করে। আর টাকা দিতে না পারলে তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া শুরু করে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশকে জানালেও এর কোনো সরাহা হয়নি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ঝলমলিয়া বাজার এলাকার এক কীটনাশক ডিলার বলেন, স্থানীয় তিনজন সুদ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নেই। তিন বছরে ওই টাকার সুদ দেয় ৫০ লাখ টাকা। এখনো সুদসহ তার দেনা প্রায় এক কোটি টাকা।

অপরদিকে, চকদোমাদি গ্রামের রফিকুল আলম দুই লাখ টাকার সুদ পরিশোধ করতে ৭ বিঘা ধানি জমি বিক্রি করেছেন। গ্রামের মধ্যে ১০টি লীজ পুকুর অল্প দরে ছেড়ে দিতে হয়েছে। এক পর্যায়ে তার স্ত্রী সংসারে অভাবের তাড়নায় তিন সন্তানকে ফেলে চলে যান। বর্তমানে রফিকুল পাগল হয়ে পথে পথে ঘুরছেন।

সাতবাড়িয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফারুক হোসেন বলেন, সুদ ব্যবসায়ীদের ফাঁদে শিলমাড়িয়া ও জিউপাড়া ইউনিয়ন এলাকার অনেক মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

সময়মত টাকা দিতে না পারায় সুদ ব্যবসায়ীদের অত্যচারে অনেকেই রাতারাতি গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আবার সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে গত কয়েক বছরে ৫ জন আত্মহত্যাও করেছেন।

জিউপাড়া ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য বলেন, উপজেলার মধ্যে সুদ ব্যবসার বেশী ধোপাপাড়া ও ঝলমলিয়া বাজার। এখানে ৪০ থেকে ৪৫ জন শীর্ষ সুদখোর রীতিমত অফিস খুলে প্রকাশ্যে তাদের ব্যবসা করছে। কেউ বিপদে পড়ে তাদের কাছ থেকে একবার টাকা নিলে রাতারাতি তার সুদ কয়েকগুন বেড়ে যায়। আর ভুক্তভোগিরা ওই টাকা পরিশোধ করতে জমিজমা বিক্রি করে পথে বসে যায়। সময়মত টাকা দিতে না পারলে সুদ ব্যবসায়ীদের লোকজন ভুক্তভোগিদের ধরে এনে গোপন ঘরে নির্যাতন চালায়।

উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু বলেন, কিছু অসহায় মানুষের সরলতার সুযোগে সুদ ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম অনেক বেড়েছে। উভয়পক্ষ গোপন চুক্তির মাধ্যমে টাকাপয়সা লেনদেন করছে। হাতে গোনা দু’একটি বিষয় প্রকাশ্যে আসলেও বেশীরভাগ ঘটনা গোপন করে রাখে। যার কারণে ওই সুদ ব্যবসায়িরা ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যায়।

সুদের বিষয়গুলো থানা ও প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। কোনো ভুক্তভোগি আমাদেরকে অভিযোগ করলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জে অডিটরিয়ামের ওয়াশরুম থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

জয়পুরহাটে ট্রাক–ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১

সাজিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

দুর্গাপুরে বধ্যভূমিতে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা ও মোনাজাত

রাকসুর জিএসকে ‘হত্যার হুমকি’ দিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক পোস্ট

বগুড়ায় ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত তিন

গভীর নলকূপ খনন: বরেন্দ্রজুড়ে শত শত মৃত্যুকূপ

শিশু সাজিদের শেষ বিদায়ে হাজারো মানুষের ঢল

আমার একটা কলিজা হারায় ফেলছি, বিচার চাই: সাজিদের বাবা

প্রাথমিকে শতভাগ বই, মাধ্যমিকে এল অর্ধেক