রাজশাহীর বাঘায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলা সালিসে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকায় আপস-মীমাংসার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে, ধর্ষণ মামলায় এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই বলে জানায় পুলিশ।
বিষয়টি স্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান ডি এম মনোয়ার হোসেন বাবুল দেওয়ান আজকের পত্রিকাকে জানান, কীভাবে বিষয়টি মীমাংসা করা যায়, সে বিষয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।
গত ১৩ জুন উপজেলার চকরাজাপুর বাজারে যাওয়ার রাস্তা থেকে চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে একটি পাটখেতে ধর্ষণ করে শিমুল হোসেন (৩০। এ সময় পারভেজ আলী (২৩) ও রকি আহমেদ (১৮) নামে দুজন পাহারা দেন। তাঁরা তিনজনই ফতেপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর চাচা বাদী হয়ে শিমুল হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ঘটনার আট দিন পর মানিকগঞ্জের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শিমুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। বাকি দুজন এখনো পলাতক।
গত শনিবার ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে সালিসের দুই পক্ষ থেকে ছয়জনের বোর্ড গঠন করা হয়। বাদীপক্ষের ছিলেন আব্দুস সোবহান মোল্লা, মজিবর রহমান, শমসের আলী নামে তিনজন, আর আসামি পক্ষে ইউপি সদস্য ইউসুফ আলীসহ বাবুল ব্যাপারী, আব্দুল করিম সেখ নামে দুজন। তবে বোর্ডে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না ইউসুফ আলী। ওই বোর্ড মামলার বাদীর পরিবারকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়।
মজিবর রহমান ও আব্দুল করিম সেখ আজকের পত্রিকাকে জানান, বিষয়টি মীমাংসার জন্য বাদীর পরিবারকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার আলোচনা হয়েছে। তবে সবকিছু আইনি প্রক্রিয়ায় হতে হবে। কোনো টাকা আদান-প্রদান হয়নি।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা জজ আদালতের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম মামুন আজকের পত্রিকাকে জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় মীমাংসার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে তা হলো আইনের লঙ্ঘন। কোনোভাবেই আপসযোগ্য নয় ধর্ষণ মামলা। তবে, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে উভয়ের বিবাহ সুযোগ আছে।
বাঘা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সবুজ রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সালিস করে ধর্ষণ মামলা মীমাংসার সুযোগ নেই। পলাতক আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।