পাঁচ বছর পর রোববার রাজশাহী আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই আগমন উপলক্ষে রাজশাহী সেজেছে নতুন সাজে। নেতাদের ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণে ভরে গেছে পুরো শহর। পরিপাটি শহরটি সাজানো হয়েছে আরও দৃষ্টিনন্দনভাবে। কর্ণফুলী টানেল এবং নৌকার আদলে সাজানো হয়েছে মঞ্চ। প্রস্তুত মাঠ। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রচার করতে শহরজুড়ে আগেই লাগানো হয়েছে মাইক। বসানো হয়েছে ডিজিটাল পর্দাও।
রোববার সকালে শেখ হাসিনা প্রথমে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে যাবেন। সেখানে নবীন বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করবেন। এরপর দুপুরে রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দানে জনসভায় ভাষণ দেবেন। এরপর রাজশাহীতে বাস্তবায়িত ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এ ছাড়া ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের যাওয়া-আসার সুবিধায় সাতটি বিশেষ ট্রেন ভাড়া দিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রাজশাহীর বিভিন্ন রুট থেকে এসব ট্রেন নেতা-কর্মীদের নিয়ে আসবে এবং যাবে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা ধারণা করছেন, রাজশাহীর কয়েকটি জেলা থেকে অন্তত ৭ লাখ নেতা-কর্মী আসবেন। এত মানুষকে মাদ্রাসা মাঠে ঠাঁই দেওয়া সম্ভব হবে না। তাই মাঠের পরিধি বড় করতে দক্ষিণ পাশের সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এর দক্ষিণে থাকা ঈদগাহ ময়দানেও নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেবেন।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ‘না চাইতেই প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীকে অনেক কিছু দিয়েছেন। রাজশাহী সেজেছে নতুন সাজে। এখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে নতুন করে চাওয়ার কিছু নেই। তারপরও কিছু না কিছু দাবি থাকেই সব সময়। সে রকম তালিকা করা হয়নি। তিনি এলে আরও উন্নয়নের জন্য যা বলার আমরা বলব।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘নির্বাচনের বছরটাকে নির্বাচনী বছর হিসেবেই ধরা হয়। সেই অর্থে এটা নির্বাচনী জনসভা। আর প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। তাই আগামী নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, সে কথাই তিনি দলীয় নেতা–কর্মীদের বলবেন।’
মেয়র আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এর আগে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন। সেটা হয়ে গেছে। এখন তিনি স্মার্ট বাংলাদেশের পরিকল্পনা করেছেন। সেটাও হয়ে যাবে। কিন্তু কীভাবে হবে, সে কথা প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী অঞ্চলের মানুষকে জানাবেন। আমরা তাঁর বক্তব্য শোনার জন্য অধীর আগ্রহে আছি। পাঁচ থেকে সাত লাখ নেতা-কর্মী জনসভায় উপস্থিত হবে।’
‘মাদ্রাসা মাঠের পাশে যে ঈদগাহ মাঠ রয়েছে, সেটিও আমরা মাঠের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে নিয়েছি। এই দুটি মাঠসহ আশপাশে যত জায়গা আছে, সড়ক আছে, মাদ্রাসা মাঠ থেকে জিরো পয়েন্ট, সিঅ্যান্ডবি মোড় থেকে লক্ষ্মীপুর, ঘোষপাড়া মোড়সহ ওই সমস্ত অঞ্চলকে আমরা জনসভা মাঠ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। সেখানে ২২০টি মাইক থাকবে, ১২টি এলইডি স্ক্রিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাঁরা মাঠে জায়গা পাবেন না, তাঁরা বাইরেও প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে পারবেন, বক্তব্য শুনতে পারেন।’
তবে এই জনসভা নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মানুষ এত আসবে না। সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির যেসব নেতা এসব বলছেন, তাঁদের রাজশাহীতে আমন্ত্রণ জানাই। দরকার হলে তাঁদের হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করে দেব। তাঁরা এসে দেখবেন।’