সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের কেবল হাটপাচিল এলাকায় প্রমত্তা যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে দুই শতাধিক পরিবারের ভিটেমাটি।
গত কয়েক বছরের ভয়াবহ ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এসব মানুষের আশ্রয়স্থল। এর পর থেকে বাস্তুহারা আশ্রয়হীন মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। সরকারি বাঁধের কিনারে, অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে বা কোনো পতিত জায়গায় কোনো রকম পলিথিন ও টিনের ছাউনি দিয়ে আশ্রয় নিয়েছে এসব পরিবার। জীবনসংগ্রামে অস্থির নদীর তাণ্ডবে বারবার হোঁচট খাওয়া এসব মানুষ এখন খুব অসহায়। স্থায়ীভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছে ভিটেমাটিহারা সম্বলহীন দুই শতাধিক পরিবার।
আজ শনিবার সকালে উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের হাটপাচিল বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের দাবিতে মানববন্ধন করেছে যমুনায় ভিটেমাটিহারা দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। এ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন যমুনার ভাঙনে বাস্তুহারা আশ্রয়হীন বিধবা মাজেদা খাতুন, জীবন বেওয়া, আজিদা বেগম, মানিক ব্যাপারী, লেদু শেখ প্রমুখ।
এ সময় বিধবা মাজেদা খাতুন জানান, অল্প বয়সেই স্বামীহারা হয়েছেন তিনি। এরপর ছোট ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। ভাগ্য বিড়ম্বনায় এই সামান্য সুখও যেন সহ্য করেনি প্রকৃতি। নির্দয় যমুনার করাল গ্রাসে চলে গেছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। এখন তিনি অন্যের জায়গায় পলিথিন ও টিনের কোনো রকম ছাউনি দিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। সম্বলহারা এই বিধবা জীবন সায়াহ্নে এসে স্থায়ীভাবে আশ্রয় পেতে চান।
বাস্তুহারা আজিদা বেগম, মানিক ব্যাপারী, লেদু শেখ বলেন, যমুনা সব কেড়ে নিয়েছে তাঁদের। কয়েকবার ভেঙে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার পর এখন ক্লান্ত সবাই। অন্যের জায়গা ভাড়া নিয়ে কোনো রকমে আশ্রয় নিলেও সেখানেও ঠিকমতো টাকা না দিতে পারায় জায়গার মালিকেরা তাড়িয়ে দিচ্ছেন। এখন সরকারের কাছে চাওয়া, সহায়-সম্বলহীন মানুষের জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।