হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার কর কর্মকর্তা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে চিকিৎসকের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রাজশাহী কর অঞ্চলের এই উপ-কমিশনারের জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আজ বুধবার সকালে উপ-কমিশনার মহিবুলকে রাজশাহী মুখ্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে (সিএমএম) হাজির করা হয়। এ সময় বিচারক মো. আল আসাদ আশিকুজ্জামান তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার বাড়ি বাগেরহাটে। তিনি ২৫তম কর ক্যাডারের কর্মকর্তা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী কর ভবনে অভিযান চালিয়ে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ তাঁকে আটক করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের একটি দল। দুদক কর্মকর্তারা মহিবুল ইসলামের দপ্তরে অভিযান চালানোর সময় দরজা ভেঙে কক্ষে ঢুকে তাঁদের ওপর হামলা চালান কর ভবনের কর্মচারীরা। পরে পুলিশের সহায়তায় তাঁকে দুদক কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

দুদক বলছে, রাজশাহীর চিকিৎসক ফাতেমা সিদ্দিকার কাছে ৬০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন মহিবুল ইসলাম। পরে ৫০ লাখে রফারফা হয়। এর প্রথম কিস্তিতে গতকাল মঙ্গলবার ১০ লাখ টাকা দিতে গিয়েছিলেন ডা. ফাতেমা। তবে বিষয়টি তিনি দুদককে জানান। তাই ঘুষ দেওয়ার পরই এই অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানের নাম ছিল ‘ফাঁদ-১, ২০২৩।’

মহিবুল ইসলামকে তাঁর কার্যালয় থেকে আটক করার পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে দুদকের উপপরিচালক (ডিডি) আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে দুর্নীতিবিরোধী আইনে মহিবুলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। আজ বুধবার সকালে তাঁকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়।

দুদকের আইনজীবী শহিদুল হক খোকন বলেন, মহিবুল ইসলামের আইনজীবীরা তাঁর জামিনের আবেদন করেছিলেন। দুদকের আইনজীবীরা মহিবুলের জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য দেন। দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. আল আসাদ আশিকুজ্জামান কর উপ-কমিশনার মহিবুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মহিবুল ইসলামের জামিনের আবেদন করেছিলাম। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। রাজশাহীর আদালতে জামিন মঞ্জুর হয়নি। আমরা নথিপত্র তুলে উচ্চ আদালতে পুনরায় জামিনের আবেদন করব।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর গাংনী মাদারল্যান্ড ফার্টিলিটি হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার নিষ্পত্তি হওয়া বেশ কিছু কর রিটার্ন প্রতিবেদনে ২৬ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ও কর ফাঁকির অভিযোগে ফাইলগুলো পুনরায় চালু করেন উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া। ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার অতীতের আয়কর রিটার্ন ফাইলে গুরুতর অসংগতির কারণে তাঁর ওপর নতুন করে সাড়ে ৩ কোটি টাকা কর নিরূপণের প্রক্রিয়া চলছিল। এর মধ্যে ফাইলগুলো জরিমানা ছাড়া নিষ্পত্তির জন্য উপ-কমিশনার ৫০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন চিকিৎসকের কাছে।

ডা. ফাতেমা সিদ্দিকাও ঘুষ দিয়ে ফাইলগুলো নিষ্পত্তির চেষ্টা করছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা ও তাঁর স্বামী ইউসুফ আলী উপ-কমিশনার মহিবুলের কক্ষে গিয়ে ১০ লাখ টাকা দেন। তাঁরা মহিবুলের কক্ষ থেকে বের হওয়ার কয়েক মিনিট পরই দুদকের বিভাগীয় পরিচালক কামরুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে যায়। দুদকের উপস্থিতি জানতে পেরে উপ-কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভেতর থেকে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় কর ভবনের কর্মচারীরা হাজির হয়ে দুদক কর্মকর্তাদের ওপর চড়াও হন।

উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া কিছুদিন আগে রাজশাহী কর ভবনে বদলি হয়ে আসেন। তিনি মূলত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত কর-সার্কেল-১৩ (বৈতনিক)-এর দায়িত্ব পান। এই সার্কেলে রাজশাহীর তিন শতাধিক চিকিৎসকের কর ফাইল রয়েছে।

কর ভবন সূত্রমতে, রাজশাহীর শতাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কর ফাইল রি-ওপেন করা হয় সম্প্রতি। তাঁদের প্রকৃত আয়ের সঙ্গে দাখিলকৃত প্রতিবেদনের বড় অসংগতি শনাক্ত করা হয়। বিশেষ করে চিকিৎসকদের ব্যাংক হিসাবের প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা নিয়ে কাজ করছিল কর ভবন। অনেক চিকিৎসককে নোটিশ পাঠানো হয়। এসব নিয়ে রাজশাহীর বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী চিকিৎসকের সঙ্গে কর ভবনের টানাপোড়েন চলছিল। এরই মধ্যে ৪ এপ্রিল কর উপ-কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে ফাঁদ অভিযানে ১০ লাখ টাকাসহ ধরা হয়।

সিরাজগঞ্জে অডিটরিয়ামের ওয়াশরুম থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

জয়পুরহাটে ট্রাক–ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১

সাজিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

দুর্গাপুরে বধ্যভূমিতে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা ও মোনাজাত

রাকসুর জিএসকে ‘হত্যার হুমকি’ দিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক পোস্ট

বগুড়ায় ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত তিন

গভীর নলকূপ খনন: বরেন্দ্রজুড়ে শত শত মৃত্যুকূপ

শিশু সাজিদের শেষ বিদায়ে হাজারো মানুষের ঢল

আমার একটা কলিজা হারায় ফেলছি, বিচার চাই: সাজিদের বাবা

প্রাথমিকে শতভাগ বই, মাধ্যমিকে এল অর্ধেক