নওগাঁর আত্রাইয়ে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে ঠিকাদারের দ্বন্দ্বে প্রায় দুই মাস ধরে আহসানগঞ্জ-নলডাঙ্গা সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। তাই ওই এলাকার প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ঠিকাদার বলছেন, কাজ করার সময় প্রকৌশলী জোনায়েদ হোসেন আমার লেবার-মিস্ত্রিদের সঙ্গে খুব বাজে ব্যবহার করেছেন এবং কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই কাজ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে প্রকৌশলী তা অস্বীকার করেছেন।
উপজেলা স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আহসানগঞ্জ-নলডাঙ্গা সড়কের দাড়িয়াগাথী আব্দুলের মোড় থেকে আশরাফ আলী চৌধুরী সেতুর পশ্চিম পাশ পর্যন্ত ৮১২ মিটার সড়ক পাকাকরণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের-৩ (আইআরআইডিপি-৩) আওতায় এই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। ৮৫ লাখ ১০ হাজার ১১৬ টাকা ব্যয়ে নির্মাণের কাজ পায় নওগাঁর রাণীনগরের মেসার্স খান ট্রেডার্স। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী আগামী বছরের ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাজ পেয়ে আগের ইট তুলে খনন করে সড়কে বালু ফেলা শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কের দুই পাশ দিয়ে এবং আশরাফ আলী সেতুর ওপর ইটের খোয়া স্তূপ করে রাখেন ঠিকাদার। এই কাজের পরিদর্শনে গিয়ে এলজিইডি প্রকৌশলী জোনায়েদ হোসেন সড়কের দুই ধারে রাখা ইটের খোয়া সরিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রেখে কাজ করতে বলেন ঠিকাদারকে। কিন্তু তার পরও সড়কের কাজ চলতে থাকায় প্রকৌশলী-ঠিকাদারের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরপর ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে যান।
দাড়িয়াগাথী গ্রামের আব্দুস ছালাম বলেন, ‘শুনেছি প্রকৌশলী-ঠিকাদার দ্বন্দ্বের কারণে ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে গেছেন।’
আবুল কাশেম মণ্ডল নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘খনন করে সড়কের মধ্যেই বালু স্তূপ করে রাখার কারণে কোনো গাড়ি চলাচল বা মালামাল পরিবহন করতে পারত না। পরে আমরা স্থানীয়রা বালু তুলে সড়কের একপাশে রেখে কোনো রকমে চলাচল করছি। এ ছাড়া সেতুর ওপর ইট ভেঙে খোয়া রাখার কারণেও চলাচল বন্ধ হয়েছিল। আমরা সে খোয়াগুলোও এক পাশে রেখে পায়ে হেঁটে চলাচল করছি।’
এ নিয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার রিন্টু হোসেন বলেন, ‘কাজ করার সময় প্রকৌশলী জোনায়েদ হোসেন আমার লেবার-মিস্ত্রিদের সঙ্গে খুব বাজে ব্যবহার করেছেন। কাজ বন্ধ করে দিয়ে তাঁদের সড়ক থেকে তুলে দিয়েছেন। এরপর থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। কিন্তু কী কারণে লেবার-মিস্ত্রি তুলে দিয়েছেন তা লিখিতভাবে জানতে চেয়েছি। এখনো আমাকে সে বিষয়ে জানানো হয়নি। তবে বিষয়টি সমাধান হলে কাজ শুরু হবে।’
এ নিয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আত্রাই উপজেলার প্রকৌশলী জোনায়েদ হোসেন বলেন, ‘আমি সড়ক থেকে লেবার-মিস্ত্রি তুলে দিইনি বা কাজ বন্ধ করে দিইনি। ঠিকাদারই কাজ বন্ধ করে চলে গেছেন। তবে কাজ দ্রুত শেষ করতে ইতিমধ্যে ঠিকাদারকে দুই দফা চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই বিষয়টির একটা সুরাহা হবে।’