জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশুকিশোর দিবস উদ্যাপন করতে গিয়ে পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে জখম করেছেন স্থানীয় এমপি আ স ম ফিরোজের সমর্থকেরা। এ ছাড়া ছয়জন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৫০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাউফল উপজেলা পরিষদের গেটসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিপেটাসহ ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়েছে। বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদার এবং রাবার বুলেট বিদ্ধ রিপন নামের একজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার পর পৌর শহরে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, দিবসটি উদ্যাপন করতে গিয়ে চার ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় জনতা ভবনে দিবসটি উদ্যাপনের জন্য স্থান নির্ধারণ করেন। অপর পক্ষ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব হাওলাদারও একই স্থানে দিবসটি উদ্যাপনের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
এ সময় এক পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে মোতালেব হাওলাদারের কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। এরপর চার-পাঁচজন নেতা-কর্মী নিয়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মোতালেব হাওলাদার জনতা ভবনের দিকে যেতে চাইলে আ স ম ফিরোজের কর্মী সমর্থকেরা এসে বাধা দেয়। তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দেখা যায়। তারা মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলা চালায়। তাঁকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সোয়েব মাহমুদ বলেন, মোতালেব হাওলাদারের শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়া রিপন নামের এক কর্মীর গায়ে একাধিক রাবার বুলেটের আঘাত থাকায় দুজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, বাউফলে সব পক্ষ শোভাযাত্রা করতে চাইলে পৃথকভাবে সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থিত নেতা-কর্মীরা বাধা উপেক্ষা করে দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে লাঠিপেটাসহ ২০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয়। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।