অভাব-অনটনের সংসারে অটোরিকশা চালিয়ে কোনোমতে চলত তিন বেলার খাবার। বাবা-ছেলে দুজন মিলে সংসারের হাল ধরেছিলেন। কিন্তু সেই সুখের সংসারে নেমে এসেছে ভয়াবহ অন্ধকার। নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার চণ্ডীগড় গ্রামের অটোরিকশাচালক আনোয়ার মিয়ার একমাত্র ছেলে শাকিল মিয়া (২২) এখন ব্লাড ক্যানসারের সঙ্গে জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে। দুই মাস আগে চিকিৎসকের পরামর্শে বিভিন্ন পরীক্ষা করানোর পর ধরা পড়ে এই মারাত্মক ব্যাধি। এই রোগ শনাক্ত হওয়ার পর থেকে তাঁদের পরিবারে নেমে আসে চরম বিপর্যয়।
অটোরিকশা চালিয়ে প্রতিদিন যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসারের খাবার জোটে কষ্টে। এমন পরিস্থিতিতে ব্লাড ক্যানসারের ব্যয়বহুল চিকিৎসা বহন করা তাঁদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তবু ছেলেকে বাঁচাতে বাবা আনোয়ার মিয়া যা কিছু ছিল, সব বিক্রি করেছেন। শুধু তা-ই নয়, চিকিৎসার জন্য লাখ টাকার ঋণও নিয়েছেন। কিন্তু এখন আর পারছেন না চিকিৎসার খরচ চালিয়ে যেতে।
শাকিলের বাবা আনোয়ার মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার একটা ছেলেই। আমি আমার ছেলেকে বাঁচাতে চাই; কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। সমাজের সহৃদয় ও মানবিক মানুষদের কাছে আমি হাতজোড় করে সাহায্য চাই।’
ছেলের চিন্তায় দিশেহারা মা শাম্মী আক্তার বলেন, ‘দুর্গাপুর থেকে ময়মনসিংহ; সেখান থেকে ঢাকায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন আমরা নিঃস্ব। দুই মাস ধরে এখানে-ওখানে ঘুরেও টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। চিকিৎসা ছাড়া সময় যত গড়াচ্ছে, ততই খারাপ হচ্ছে শাকিলের অবস্থা।’
ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত শাকিল একসময় পড়াশোনা ছেড়ে বাবার সঙ্গে অটোরিকশা চালিয়ে সংসারের হাল ধরেছিলেন। যে ছেলে পরিবারের জন্য লড়ছিলেন, আজ তিনি নিজেই অসহায়। চোখে অশ্রু নিয়ে তাঁর সরল আকুতি, ‘আমি বাঁচতে চাই।’