ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম বাণিজ্যিক কুমির খামার ‘রেপটাইলস ফার্ম’ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার হাতিবেড় গ্রামে খামারটি আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এ উপলক্ষে সেখানে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
২০০৪ সালে ময়মনসিংহের ভালুকায় ১৫ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় দেশের প্রথম বাণিজ্যিক কুমিরের খামার রেপটাইলস ফার্ম। খামারের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন মুশতাক আহমেদ। আর ৩৬ শতাংশ মালিকানা নিয়ে সঙ্গে ছিলেন মেজবাহুল হক। ২০১২ সালে তিনি খামারের শেয়ার ছেড়ে দিলে মালিকানায় আসেন প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদার। এরপর থেকে খামার দেখিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ বের করে নেন পি কে হালদার। ২০২০ সালে সরকার পি কে হালদার ইস্যুতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করলে ঝুঁকিতে পড়ে কুমিরের পরিচর্যা।
২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ড. নাইম আহমেদকে চেয়ারম্যান করে ছয় সদস্যের পরিচালনা বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ড ২০২২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি খামারের কার্যক্রম নতুন করে শুরু করে।
আজ সংবাদ সম্মেলনে রেপটাইল ফার্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. নাইম আহমেদ বলেন, ‘মুখ থুবড়ে পড়া খামারটির দায়িত্ব নেওয়ার পর ১ হাজার ৭৩০টি কুমির অসুস্থ পাই। তখন প্রতিদিনই কুমির মারা যাচ্ছিল। সেই সংকট কাটিয়ে আমরা এখন একটু ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’
রেপটাইল ফার্ম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুমির বিশেষজ্ঞ এনাম হক বলেন, ‘এটিকে বিশ্বের অন্যতম কুমির খামার হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে চাই। পর্যটনের পাশাপাশি এখানে একটি রিসার্চ সেন্টারও করা হবে। মানুষ অনেক ভ্রমণপ্রিয়, তাই এ খাতে সফলতা আসবেই।’
রেপটাইল ফার্মের ব্যবস্থাপক ডা. আবু সাইম মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘পর্যটকদের জন্য প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কুমির খামারটি উন্মুক্ত থাকবে। প্রবেশের টিকিট মূল্য ধরা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১৫০ টাকা, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০০ টাকা। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড় রয়েছে।’
পর্যটক রোকেয়া আক্তার বলেন, উদ্বোধনের প্রথম দিনেই পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। জীবনে অনেক বিনোদনকেন্দ্রে গেছি, কিন্তু আজকের মতো আনন্দ পাইনি। তবে অবকাঠামোগত আরও উন্নয়ন দরকার। তাহলে মানুষ তৃপ্তি নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে।
কুমির চাষ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের স্বপ্ন দেখছেন খামারটির পরিচালনা পরিষদের নেতারা। সেই লক্ষ্যে খামারটির নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরু হলো।