হোম > সারা দেশ > ময়মনসিংহ

পুলিশ কেন আমার ছেলেকে গুলি করে পাখির মতো মারল 

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

‘আমার ছেলেটা কোনো রাজনীতি করে না, কোটা আন্দোলনকারীরও ছিল না, সে সাধারণ শ্রমিক। পুলিশ কেন আমার নিষ্পাপ ছেলেটারে গুলি করে পাখির মতো মারল? আমার সন্তানটাকে কেউ কি ফিরিয়ে দিতে পারবে? আমি এর বিচার চাই।’ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে নিহত শ্রমিক মো. জামান মিয়ার (১৭) বাবা শহীদুল ইসলাম এইভাবেই কথাগুলো বলেন। 

২১ জুলাই নরসিংদীতে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় মো. জামান মিয়া। সে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর দেউলডাংরা ওয়ার্ডের মো. শহীদুল ইসলামের ছেলে এবং নরসিংদী সদর এলাকার তানিয়া ডায়িং কারখানার নিয়মিত শ্রমিক ছিল। 

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে মো. জামান মিয়া নরসিংদী সদরে তানিয়া ডায়িং কারখানায় ১৫ হাজার টাকা বেতনে শ্রমিকের চাকরি নেয়। সেখানেই একটি মেসে থাকত। ২১ জুলাই সকালের দিকে মেস থেকে বের হয়ে কারখানায় যেতেই পুলিশ গুলি করে। পাশাপাশি দুটি গুলি তার পেটের ডান পাশ দিয়ে ছিদ্র করে বাম পাশ দিয়ে বের হয়। 

এতে ঘটনাস্থলে সে দেড় ঘণ্টা পড়ে ছিল। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। গুলিতে তার পেটের নাড়িভুঁড়ি কেটে যায়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জুলাই সকালে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ ময়নাতদন্ত করে ওই দিনই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। রাত ১০টার দিকে নান্দাইলের দেউলডাংরা গ্রামে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। 

নিহত জামান মিয়ার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনশেডের একটি ঘরের ভেতরে বসে মা মিনারা বেগম ছেলের জন্য কান্না করছেন। তাঁকে পরিবারের লোকজন সান্ত্বনা দিচ্ছেন। সাংবাদিক আসছে খবরে শুনে মিনারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেটারে কি ফিরিয়ে দিতে পারবেন?’ এ সময় জামান মিয়ার বাবা শহিদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে ছেলের ছবি দেখিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। 

প্রতিবেশীরা জানান, নিহত জামানের বাবা মো. শহিদুল ইসলাম বাড়ির পাশে একটি ছোট মনিহারি দোকান করেন। ছয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে জামান মিয়া চতুর্থ সন্তান। শ্রমিকের চাকরি করে সংসারের ব্যয় বহন করত। 

জামানের বড় ভাই মো. রায়হান মিয়া বলেন, ‘আমার ভাই আর কোনো দিন ফিরে আসবে না। কেনইবা আমার ভাইকে এইভাবে গুলি করে হত্যা করল। আমরা দুনিয়ার বিচার চাইব না, আখিরাতের বিচার চাইব।’ 

মা মিনারা বেগম বলেন, ‘শ্রমিকের কাজ করে ছেলেটা আমাকে চলার জন্য টাকা পাঠাত। এহন তো আর কেউ টাকা পাঠাবে না। আমার চলতে অনেক কষ্ট হবে। মৃত্যুর চার দিন পার হলেও কেউ খোঁজ নেয়নি।’ 

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মিলন মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছেলেটি একটি কোম্পানিতে চাকরি করত। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় কারখানায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।

ময়মনসিংহে নিহত দীপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক, স্ত্রীকে চাকরির আশ্বাস

পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন: গ্রেপ্তার ১২ আসামির ৩ দিন করে রিমান্ড

নড়বড়ে বাঁশে ঠেস দেওয়া ৪৮০ ভোল্টের খুঁটি

বিস্ফোরক মামলায় সাবেক এমপি সারোয়ার কারাগারে

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন: আরও ২ আসামি গ্রেপ্তার

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

দিপু চন্দ্রকে জোরপূর্বক চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়: র‍্যাব

ময়মনসিংহের নান্দাইল: নদীর জায়গা দখল করে আ.লীগ নেতার মার্কেট

দিপুকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশে আগুন