হোম > সারা দেশ > ময়মনসিংহ

দুর্ঘটনার পরও থামেনি সেই চালক

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ড্রাইভার শোনেনি  গাড়ি থামানোর আকুতি। আধা কিলোমিটার পেছনে পড়ে ছিল ফজলুল হক সহ তাঁর পরিবারের তিন সদস্যের লাশ। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও ৮ বছরের শিশু আজমিনা বেঁচে ফেরা তার দাদার কোলে ছিল। সে তার মায়ের কোলে ফেরার কিছুক্ষণ পরই ঘটে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এখন ফজলুল হকের পরিবারে রইল শুধু তার বৃদ্ধ দুই বাবা-মা।

এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার ছনধরা ইউনিয়নের ফজলুল হকের চাচা গাড়িতে থাকা রফিক মন্ডল।

তিনি বলেন, আমিও তাদের সঙ্গে গাড়ির ডানে ছিলাম। কিছু দূর আগে আমি ডানপাশ থেকে গাড়ির বামপাশে এসে বসি। আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। গাড়িতে ধাক্কা লাগার পরে সজাগ হয়ে দেখি আমার ভাতিজা, ভাতিজা বউ, ও তাদের দুই ছেলেমেয়ে গাড়ির ডানপাশের অংশ ভেঙে অনেক পেছনে পড়ে রয়েছে। নেমে আধা কিলোমিটার পেছনে গিয়ে দেখি তারা আর বেঁচে নেই। একেকজন পড়ে রয়েছে একেক জায়গায়, এসব বলে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল সে। 

সে কান্না কিছুটা থামিয়ে আবার বলল, আমি এখন আমার বাড়ির লোকজনকে কীভাবে বলব এই পরিবারের সবাই এভাবে চলে যাওয়ার কথা। পরে অন্য যাত্রীদের কাছ থেকে শুনলাম ড্রাইভারকে গাড়িতে থাকা অক্ষত যাত্রীরা গাড়ি থামাতে বললেও ড্রাইভার শোনেনি তাদের কথা। 

মো. আজমল মন্ডল জানায়, ফজলুল হক ও সে ঢাকায় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে ফেরি করে আচার বিক্রি করত। ওইখানেই তাঁর ভাতিজার বউ ও তাদের দুই ছেলেমেয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকত। ১৫ বছর ধরে তারা ওইখানে এই ব্যবসা করত। 

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চেলেরঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা ড্রাম ট্রাকে যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের চারজনসহ ৭ জন নিহত হয়। এতে আহত হয় আরও ৯ জন। 

ত্রিশাল থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, আজ শনিবার বিকেলে শেরপুরগামী রহিম পরিবহন ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট নামক স্থানে ওভারটেক করার সময় দাঁড়িয়ে থাকা পাথর ভর্তি ড্রাম ট্রাককে ধাক্কা দিলে বাসের পেছনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের পিতা মাতা দু-শিশু সন্তানসহ মোট ৫ জন নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে দশজন। 

আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে হাসপাতালে আরও দু'জন মৃত্যুবরণ করেন। 

নিহতরা হলেন ফুলপুর উপজেলার একই পরিবারের ফজলুল হক (ফজু) (৩০), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৮), ছেলে আব্দুল্লাহ (৬) ও মেয়ে মারিয়া বেগম (০৮)। 

এছাড়াও হেলেনা (৪০), মিরাজ (৩৫) ও অজ্ঞাত একজন (৩৫) মারা গেছে। 

আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে উপজেলার নিগোরকান্দা গ্রামের ফাহাদ, বাবুল ও ফুলপুর উপজেলার রফিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন জানান, উপজেলার চেলেরঘাট নামকস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা ড্রাম ট্রাকে পেছন দিকে আসা শেরপুরগামী বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের চারজনসহ সাতজন নিহত ও দশজন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন নিহত হয়েছে। মহাসড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগ: অবৈধভাবে চলছে ৪৫৯ ইটভাটা

ময়মনসিংহে সদস্যপদ স্থগিত জামায়াত নেতার মনোনয়নপত্র দাখিল

ত্রিশালের এমপি হতে চান ভিক্ষুক আবুল মুনসুর, জমা দিলেন মনোনয়নপত্র

গফরগাঁওয়ে ট্রেন লাইনচ্যুত: গতি কম থাকায় রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা

ভালুকায় শ্রমিকবাহী বাস উল্টে এক শ্রমিক নিহত, আহত ২০

রেললাইন খুলে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা, ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল যোগাযোগ বন্ধ

বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেন সাবেক এমপি শাহিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা

মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে ফের ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ

ময়মনসিংহে মাজার ভাঙচুর ও মলমূত্র নিক্ষেপের ঘটনায় মামলা

বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে রেলপথ অবরোধ-আগুন, ট্রেন চলাচল বন্ধ