শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের ঢালে আমন ধান পাকা শুরু হতেই বেড়েছে বন্য হাতির উৎপাত। প্রায়ই পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতির দল ধানের খেত নষ্ট করছে। যার ফলে স্থানীয় কৃষকেরা এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
বন বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, ভারতের মেঘালয় সীমান্তবর্তী পাহাড় থেকে প্রায়ই বন্য হাতির দল সীমান্ত পেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। দিনের বেলায় তারা টিলায় ঘোরাফেরা করলেও সন্ধ্যা নামলেই খাদ্যের সন্ধানে ধানখেতে হানা দেয়।
গত কয়েক দিনে বন্য হাতির দল উপজেলার পশ্চিম সমশ্চুড়া, মায়াঘাঁসি ও ফেকামারি এলাকায় আক্রমণ চালিয়েছে। এর মধ্যে শুধু পশ্চিম সমশ্চুড়া গ্রামেই হাতির দাপটে প্রায় ৯ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে এবং অন্তত ১৭ জন কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
ফসল রক্ষায় স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন জ্বালিয়ে ও ঢাকঢোল পিটিয়ে হাতির দল তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। অনেকে পাহাড়ের টিলায় অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করে পালা করে পাহারা দিচ্ছেন।
বিশপনগর গ্রামের কৃষক প্রদীপ সাংমা বলেন, ‘পাঁচ শতক জমিতে ধান আবাদ করেছি। ধান এখন আধা পাকা। হাতির ভয়ে হয়তো আগেই কেটে ফেলতে হবে।’
পশ্চিম সমশ্চুড়া গ্রামের কৃষক আয়ুব আলী বলেন, ‘রাতে সবাই মিলে খেত পাহারা দিতে হয়। হাতি এলে ঢাকঢোল বাজিয়ে তাড়াই। এবার ধান ভালো হয়েছিল, কিন্তু হাতির দাপটে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’
এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি আরফান আলী এ বিষয়ে বলেন, ‘দিনে হাতির দল জঙ্গলে থাকে, আর সন্ধ্যার পর খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নামে। সবাইকে অনুরোধ করছি, কেউ যেন হাতিকে আঘাত না করে।’
ময়মনসিংহ বন বিভাগের সমশ্চুড়া বিট কর্মকর্তা মো. কাওসার বলেন, ‘প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি বন্য হাতি এখন এই এলাকায় অবস্থান করছে। ধান পাকার মৌসুমে খাদ্যের অভাবে তারা গ্রামে নেমে আসে। এতে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।’ তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বন বিভাগের কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারবেন।