সুরাইয়ার ভাষা অস্পষ্ট, ইশারায় ভাববিনিময় করেন। হাত অকেজো থাকায় পা দিয়ে লিখেই পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন সুরাইয়া। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে সেই পা দিয়ে লিখেই ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত গুচ্ছ পদ্ধতির 'বি' ইউনিটের ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন অদম্য সুরাইয়া।
আজ রোববার জামালপুরের মেলান্দহে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেফমুবপ্রবি) কেন্দ্রে সুরাইয়া এই ভর্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ২৮ নম্বর কক্ষে মেঝেতে মাদুরে বসে পরীক্ষা দেন সুরাইয়া। এই কক্ষে ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩০ জন।
সুরাইয়ার গ্রামের বাড়ি শেরপুর জেলা সদরের আন্দারিয়া সুতির পাড়ে। আজ সকালে সেখান থেকেই বঙ্গমাতা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে বাবা ছফির উদ্দিন ও মা মুর্শেদা ছফিরের সঙ্গে আসেন সুরাইয়া।
মুর্শিদা ছফির বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েই সুরাইয়া জন্মগ্রহণ করেছে। কিন্তু তার খুব ইচ্ছা পড়াশোনা করার। এই অবস্থানে আসার পেছনে আমাদের রয়েছে নানা সংগ্রামের গল্প। নানামুখী সংকট থাকা সত্ত্বেও আমরা তাকে উৎসাহ দিয়েছি। তার জন্য কখনোই মন খারাপ করিনি। সুরাইয়ার সফল হওয়ার জন্য আমরা তার সংগ্রামের সঙ্গী হয়ে থাকব। আমাদের চাওয়া সুরাইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শেষ করবে এবং বড় কর্মকর্তা হয়ে দেশের সেবা করবে।’
মুর্শিদা ছফির আরও বলেন, ‘পরীক্ষার হলে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করেছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অদম্য উৎসাহ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েই প্রতিবন্ধীরা সমাজের বিভিন্ন জায়গায় ভালো করছে। তাঁদের এ হার না মানা মনোভাব অবশ্যই প্রশংসনীয়।’
উল্লেখ্য, সুরাইয়া শেরপুর মডেল গার্লস কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৪.০০ এবং এসএসসিতে জিপিএ ৪.১১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।