নেত্রকোনার বারহাট্টায় কথা-কাটাকাটির জেরে পেটানোর পর কলেজ গেট থেকে তুলে নেওয়া সেই কলেজছাত্রকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে কলেজছাত্র মো. রিপন মিয়াকে (১৬) নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফল হক আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, ‘কলেজছাত্র রিপনকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। এতে সে ঠিকমতো কথা কথা বলতে পারছে না। এ ঘটনার রিপনের ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
ভুক্তভোগী মো. রিপন মিয়া উপজেলার বাউসি ইউনিয়নের পূর্বদত্তখিলা গ্রামের মো. মন্তাজ উদ্দিনের ছেলে। সে বাউসি অর্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার বাউসি অর্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (স্কুল অ্যান্ড কলেজ) গেট থেকে রিপনকে পেটানোর পর তুলে নিয়ে যায় ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের নেতৃত্ব দেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান ইমন ও রেজুয়ান হোসেন বাপ্পী। এদিন সন্ধ্যায় রিপনকে উপজেলার ছালিপুড়া গ্রামের একটি সেতুর পাশ থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
আহত কলেজছাত্র রিপনের নানা বাউসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আব্দুল কুদ্দছ তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রিপনকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রচুর মারধর করেছে। শরীরে লোহার রড দিয়ে পিটিয়েছে। সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঠিকমতো কথাও বলতে পারছে না। দীর্ঘদিন এই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ছিলাম। এমন জঘন্য ঘটনা এটাই প্রথম দেখলাম। এ ঘটনায় মামলার আবেদন রাতেই দেওয়া হয়েছে। তবে উপজেলার কয়েকজন মামলা রেকর্ড না করার জন্য সুপারিশ করছেন। তারা এর যথাযথ বিচার করার আশ্বাস দিয়েছেন। রিপনের সুস্থতা আমাদের কাছে অগ্রাধিকার। রিপনের মা-বাবাসহ আমরা সবাই হাসপাতালে রিপনের পাশে আছি। তবে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে বাউসি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুল হক বলেন, ‘কলেজছাত্র রিপনকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উদ্ধার করে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার হওয়া উচিত। আমি চিকিৎসাধীন রিপনকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছি।’
বারহাট্টা থানার ওসি মো. লুৎফল হক বলেন, ‘এ ঘটনায় রিপনের ভাই মঙ্গলবার রাতেই মামলার আবেদন করেছেন। আবেদনের সময় তাঁর ভোটার আইডি কার্ডটি নিয়ে আসেননি। ভোটার আইডিটি নিয়ে আসলেই মামলা রেকর্ড করা হবে।’
উল্লেখ্য, কথা-কাটাকাটির জেরে গত মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার বাউসি অর্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রিপনকে পেটানোর পর তুলে নিয়ে যায় একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র আশিকুর রহমান ইমন ও বাপ্পীর নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষার্থী। একটি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধর ও রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয় তাকে। পরে সন্ধ্যায় উপজেলার ছালিপুড়া গ্রামের একটি সেতুর পাশে ফেলে রেখে যায়। সেখান থকে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।