হোম > সারা দেশ > ময়মনসিংহ

প্রচণ্ড তাপে রেললাইন বেঁকে গিয়ে দুর্ঘটনা মোকাবিলায় নজরদারি বাড়াল কর্তৃপক্ষ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সারা দেশে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ চলছে। এর প্রভাব মানুষসহ অন্যান্য প্রাণি ছাড়াও প্রকৃতি ও জড়বস্তুতেও পড়েছে। এই সপ্তাহে ময়মনসিংহে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড এই তাপে রেললাইন বেঁকে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় নজরদারি বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, অতিরিক্ত ঠান্ডা ও তাপের কারণে রেললাইন সংকুচিত ও সম্প্রসারিত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। সাধারণত তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। কিন্তু অন্যান্য জিনিসের চেয়ে ধাতু অনেক বেশি তাপ পরিবহন করে। যেমন তাপমাত্রা যদি ৩০-৩৫ ডিগ্রি থাকে, রেললাইনের পাতে সেটা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। এ জন্য রেলে দুর্ঘটনার শঙ্কা থেকে যায়। যে কারণে লাইনে সার্বক্ষণিক তদারক করা হচ্ছে। এ ছাড়া ত্রুটিপূর্ণ লাইন মেরামতের কাজ চলছে।

রেলওয়ের ময়মনসিংহ জোন হচ্ছে ময়মনসিংহ থেকে শ্রীপুর, বিদ্যাগঞ্জ, মোহনগঞ্জ, আঠারোবাড়ী, জারিয়া জাঞ্জাইল ও ভৈরব রেলপথের মোট ২০২ কিলোমিটার। দীর্ঘ এই রেলপথের কোথাও কোথাও বছরের পর বছর অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থেকে পচন ধরেছে স্লিপারে। কোনো কোনো স্থানে আবার অস্তিত্বই নেই নাট-বল্টু বা হুকের। বেহাল অবস্থা গুরুত্বপূর্ণ রেল সেতুগুলোরও। কাঠের স্লিপারের ওপর লাইন বসিয়ে আটকানো হয় ক্লিপ দিয়ে। প্রতিটি স্লিপারের দুই পাশে কমপক্ষে আটটি করে ক্লিপ থাকার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ স্লিপারেই ক্লিপের বালাই নেই। গরমে এসব স্থানে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

সানকিপাড়া রেলক্রসিং এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরীর মধ্যেই রেললাইনের খারাপ অবস্থা। কংক্রিটের স্লিপারের পাশাপাশি রয়েছে কাঠের স্লিপার। কাঠের স্লিপারের বেশির অংশে নেই নাট-বল্টু। যে কারণে তীব্র গরমে রেললাইন অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।

গৌরীপুরের বাসিন্দা নাজমুল হাসান জনি বলেন, ব্রিটিশ আমলে ময়মনসিংহে রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। এরপর থেকে সামান্য মেরামত ছাড়া বড় কোনো ধরনের মেরামতের উদ্যোগ আমাদের চোখে পড়েনি। গৌরীপুর থেকে ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন একেবারেই ধীরে ধীরে চলে। অনেক স্থানে নেই স্লিপার; তা থাকলেও নাট-বল্টু কম। মাঝেমধ্যে স্থানীয়রা নাট-বল্টু তুলে নিয়ে যায়। সেগুলো ভালো করে লাগানোও হয়নি। এখন যে গরম পড়েছে, যদি দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে তা অস্বাভাবিক বলে মনে হবে না।

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইইই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান এস এম আনোয়ারুল হক বলেন, তাপমাত্রা বেশি হলে রেললাইন বেঁকে যায়। অনেক দেশ এই সমস্যা সমাধানে রেললাইনে ব্যবহার করছে সাদা রং। কারণ সাদা রং সবচেয়ে কম তাপ শোষণ করে। তাতে তাপমাত্রা কম হয় ৫-১০ ডিগ্রি পর্যন্ত।

রেললাইন বেঁকে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে হলে দুপাশে গাছপালা লাগানো যেতে পারে। তাতে লাভ হয় দুটি। বন্যায় রেললাইনের নিচের মাটি সহজে সরে না। সেই সঙ্গে রেললাইন গরম কম হয়। কিন্তু গাছপালা না থাকলে সরাসরি সূর্যের তাপে গরম হয়ে রেললাইনের লোহার আকার বেড়ে যেতে পারে। তখন সেগুলো এঁকেবেঁকে জায়গা করে দেয় অতিরিক্ত অংশগুলোকে। এ ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানোও প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আকরাম আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সারা দেশে তাপপ্রবাহ চলছে। বিষয়টি মাথায় রেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রেললাইনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুরোনো লাইন সংস্কারের পাশাপাশি নতুন লাইন যেন ত্রুটিমুক্ত থাকে আমরা খেয়াল রাখছি। গরমে টহল টিমের সদস্য বাড়ানো হয়েছে। সমস্যার কোনো নমুনা পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঝুঁকির মধ্যে এখন পর্যন্ত পড়িনি। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় তদারকি বাড়ানো হয়েছে। ২৫ কিলোমিটারের মতো লাইন রেন্যুয়াল করা হয়েছে। আশা রাখছি, সমস্যা হবে না।’

গড়ে ওঠেনি স্মৃতির মিনার

ময়মনসিংহে হেলে পড়েছে ৫ তলা ভবন, আতঙ্কে বাসা ফাঁকা

নেত্রকোনায় লরি-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ১

১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা সব নতুন বই হাতে পাবে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

শেরপুরে অবৈধ ৩ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

ময়মনসিংহে টমেটোখেতে ‘মড়ক’, দিশেহারা কৃষক

পদোন্নতির ডাক পেলেন শেখ হাসিনার সাজা প্রত্যাখ্যান করা শিক্ষক মাসুদ রানা

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্ক: শোকজের জবাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন চিকিৎসক ধনদেব

উদ্ভট এক উটের পিঠে চলছে স্বাস্থ্যসেবা: ডিজির সঙ্গে তর্কের পর অব্যাহতি পাওয়া চিকিৎসক