বন্যার আশঙ্কায় নেত্রকোনায় হাওরের বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে মাইকে প্রচারণা চালাচ্ছে কৃষি বিভাগ। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী ও কলমাকান্দা এলাকায় ৪০ শতাংশের বেশি খেতের বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে শতভাগ ধান কাটার কথা জানায় কৃষি বিভাগ।
আবহাওয়া বিভাগের বরাতে জানা গেছে, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে টানা ১১ দিন ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিসহ ভারী বৃষ্টিপাতে হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই দ্রুত হাওরের পাকা ধান কেটে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। এর মধ্যে হাওরে ৪০ হাজার ৯৭৪ হেক্টর জমি রয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এসব খেতের পাকা ধান কাটতে শুরু করেন কৃষকেরা। এবার এখন পর্যন্ত হাওরে পানি না আসায় কৃষকেরা স্বস্তিতে ধান কাটছেন। শ্রমিকদের পাশাপাশি ৭ শতাধিক কম্বাইন্ড মেশিনের সাহায্যে ধান কাটা হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খালিয়াজুরী উপজেলায় ২০ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু হাওরে ১৮ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি জমির ধান কাটা হয়েছে। আরও ৩০ ভাগ জমিতে পাকা ধান রয়েছে।’
কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘হাওরে পর্যাপ্ত ধান কাটার মেশিন রয়েছে। কৃষকেরা চাইলে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সব ধান কেটে ফেলতে পারেন। তবে, মাইকিং করায় কৃষকেরা ধান কাটতে অনেক তৎপর হয়েছেন। এতে রৌদ্র থাকা অবস্থায় তারা ধানগুলো শুকিয়ে ঘরে তুলতে পারবেন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলায় এবার ৪০ হাজার ৯৭৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি খেতের বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি ধান কাটা শেষ হবে।’
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কৃষকেরা যাতে নির্বিঘ্নে ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারেন, সে জন্য আমরা ছুটি বাতিল করে সর্বক্ষণ মাঠে রয়েছি।’