ময়মনসিংহ মেডিকেলে কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ফের চালু করা হয়েছে ক্যাথল্যাব। এখন থেকে মমেক হাসপাতালেই রক্তনালির ব্লক নির্ণয়, রিং পরানো ছাড়াও পেসমেকার লাগানোসহ শিশুদের জন্মগত হৃদ্রোগও নির্ণয় করা যাবে।
জানা যায়, তৃতীয়বারের মতো গত মঙ্গলবার পুনরায় ক্যাথল্যাব কার্যক্রম চালু হয়। ওই দিন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ১২ জন রোগীর এনজিওগ্রাম করানো হয়। তাঁদের মধ্যে তিনজনের হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় রিং পরানো হয়েছে। রোগীরা সবাই সুস্থ আছেন।
ময়মনসিংহ অঞ্চল ছাড়াও সিলেট, সুনামগঞ্জ, রৌমারী, কুড়িগ্রামসহ প্রায় ২ কোটি মানুষের চিকিৎসা সেবার অন্যতম ভরসাস্থল মমেক হাসপাতাল। হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিভাগে ৫০ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন দুই শতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। জটিল রোগীদের ঢাকায় স্থানান্তর করার পর নেওয়ার পথে ঘটত প্রাণহানি। তবে এখন থেকে আশার কথা হলো, হাসপাতালেই রক্তনালির ব্লক নির্ণয়, রিং পরানো ছাড়াও পেসমেকার লাগানো এবং শিশুদের জন্মগত হৃদ্রোগও নির্ণয় করা যাবে।
নগরীর বাসিন্দা তামিম শিকদার বলেন, ‘বহুল প্রত্যাশিত ক্যাথল্যাবটি পুনরায় চালু হওয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি। কয়েক দিন আগে ঢাকায় গিয়ে বাবাকে এনজিওগ্রাম ও রিং পরাতে হয়েছে। তখন আমাদের কিছুটা ভোগান্তিও পোহাতে হয়। এখন ঘরের কাছেই মানুষ সর্বোচ্চ সেবা পাবে।’
জেলা জন-উদ্যোগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, ক্যাথল্যাব চালু হওয়া ময়মনসিংহসহ আশপাশের আরও কয়েক জেলার মানুষের জন্য সুখবর। প্রত্যাশা থাকবে এটি যেন চলমান থাকে। তাহলে মানুষকে সেবার জন্য ঢাকা অথবা দেশের বাইরে যেতে হবে না।
আহ্বায়ক আরও বলেন, দক্ষ টেকনিশিয়ান ও চিকিৎসক দিয়ে ক্যাথল্যাবটি পরিচালনার পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যেন সুলভমূল্যে সেবা পায়, সেদিকে কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে হবে। তাহলেই মানুষ এর সুফল ভোগ করতে পারবে।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মমেক হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. তারিকুল ইসলাম খান বলেন, ২০২০ সালের ১৫ মার্চ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাছির উদ্দিন আহম্মেদ দায়িত্বে থাকার সময় ক্যাথল্যাব স্থাপন করা হয়। এর তিন দিন পর ১৮ মার্চ দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর ক্যাথল্যাব বন্ধ হয়ে যায়।
ডা. তারিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজলুল কবির পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর ২০২১ সালের ২৮ মার্চ ক্যাথল্যাব আবারও চালু করা হয়। ওই সময় আমিই প্রথম ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৬ জনের এনজিওগ্রাম করি। এর পরদিন থেকে সরকার আবারও লকডাউন ঘোষণা করায় ক্যাথল্যাবের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।