স্বপ্নের দেশ ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ায় ট্রলার ডুবে নিখোঁজ হন শিবচরের যুবক রিফাত তালুকদার। পরে জানা যায়, লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে ডুবে যায় তাঁর ট্রলার। এর প্রায় ৫ মাস পর রিফাতের মরদেহ ফিরল বাংলাদেশে নিজবাড়িতে। নিহত রিফাত মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের তালুকদারকান্দি গ্রামের হুমায়ুন তালুকদার ও শিল্পী বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় পৌঁছায় রিফাত তালুকদার। লিবিয়া গিয়ে দুই মাস অপেক্ষার পর ১৮ ডিসেম্বর সাগর পথে রওনা হন তিনি। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি তাঁর। ইতালির উদ্দেশে ট্রলারে ওঠার পর রিফাতের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় তাঁর পরিবারের সদস্যদের। বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে, এই আশা-নিরাশার মধ্যে গেল রমজানের ২৫ তারিখ রিফাতের খোঁজ পায় তাঁর পরিবার। তবে তখন আর রিফাত জীবিত নেই। খবর আসে, মরদেহ লিবিয়ার একটি হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি রিফাতের সন্ধানের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে রিফাতের পরিবার।
নিহত রিফাতের মামা হাবিব মুন্সী বলেন, ‘অনেক দিন রিফাতের কোনো খোঁজ ছিল না। গত রমজানে আমরা জানতে পারি, ওর লাশ লিবিয়ায় আছে। এরপর লাশ আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। শনিবার বিকেলে লাশ আসে বাড়িতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার একটাই ভাগিনা ছিল। ওরে কোনোভাবেই বিদেশ যেতে দিতে রাজি ছিল না ওর বাবা-মা। একরকম পাগলামি করে সে লিবিয়া যায়। বাড়িতে সহায়-সম্পত্তির অভাব নেই। তারপরও লিবিয়া হয়ে ইতালি যেতে পাগল হয়ে ওঠে সে।’
নিহত রিফাতের বাবা হুমায়ুন তালুকদার বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ওর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন সাগরে ট্রলারডুবির কথা শুনি। রিফাতের কোনো খোঁজ পাই না। আশায় ছিলাম, হয়তো বেঁচে আছে। এরপর গত রমজানে শুনি লাশ মর্গে। একটাই সন্তান আমার।’ শনিবার বিকেলে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভীন খানম বলেন, ‘দুঃখজনক ঘটনা। খোঁজখবর নিচ্ছি ওই পরিবারের।’