হোম > সারা দেশ > মাদারীপুর

মাদারীপুরে ৩ খুন: ঘটনার পেছনে পা ভাঙার প্রতিশোধসহ ৩ কারণ

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুর সদরের খোয়াজপুরে নিহতদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রকাশ্যে হাতুড়িপেটা করে দুই পা ভেঙে দেওয়ার প্রতিশোধ, হাটবাজারের ইজারা দখল ও বালু ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব—মূলত এই তিন কারণে মাদারীপুর সদরের খোয়াজপুরে তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয় একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এলাকাবাসী জানান, গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় হোসেন সরদার ও শাজাহান খাঁর লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালান। এই হামলায় আজিবর সরদারের ছেলে সাইফুল সরদার (৪০) ও আতাউর সরদার (৩৫) এবং তাঁদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদার (১৬) মারা যান। পলাশের বাবার নাম মুজাম সরদার। হামলাকালে তিনজন স্থানীয় মসজিদে আশ্রয় নিয়েও প্রাণ রক্ষা করতে পারেননি। তাঁদের কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

আজ রোববার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। পুরুষের উপস্থিতি কম। সবার মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। এ সময় নাম না প্রকাশ করে কয়েকজন জানান, সাইফুল ছিলেন খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি কখনো মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের পক্ষে আবার কখনো দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের পক্ষে থাকতেন। তিনি এলাকায় হয়ে উঠেছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তাঁর কথা না শুনলেই করা হতো অত্যাচার, মারধর। এসব ঘটনায় থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।

এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হিসেবে সাইফুল বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই ব্যবসাকে কেন্দ্র করে হোসেনের সঙ্গে সাইফুলের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। গত বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা হোসেনকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়া হয়। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাইফুল বালু ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া কয়েক দিন আগে তিনি খোয়াজপুরের একটি হাটের ইজারা নেন। এসব ঘিরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে প্রতিপক্ষের লোকজন।

সাইফুলের স্ত্রী সেতু বেগম বলেন, ‘বালু ব্যবসা আর হাটের ইজারার দ্বন্দ্ব নিয়েই হোসেন সরদার আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমার এক মেয়ের বয়স ৯ বছর। ছোট মেয়ের বয়স এক মাস, এখনো তার নাম ঠিক করা হয়নি। তার আগেই সে তার বাবাকে হারাল। এখান আমি আমার এই দুই সন্তান নিয়ে কোথায় যাব, কী করব? তা ছাড়া আগুন দিয়ে আমাদের ঘরবাড়ি সব পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। আমাদের পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নেই। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’

এদিকে আজ দুপুরে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গ থেকে লাশ পরিবারের কাছে দেওয়া হয়। পরে বিকেলে খোয়াজপুরের পারিবারিক কবরস্থানে বাবা আজিবের কবরের পাশে দুই ভাই সাইফুল ও আতাউরকে দাফন করা হয়।

এ হত্যার ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানায় ৪৯ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহত সাইফুল ও আতাউরের মা সুফিয়া বেগম। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হোসেনকে। পুলিশ এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মাদারীপুর সদরের খোয়াজপুরে লাশ দাফনের জন্য কবর খনন করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মামলার বাদী সুফিয়া বলেন, ‘আমার দুই ছেলেসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে হোসেন সরদার, শাজাহান খাঁসহ তাদের লোকজন। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমার আরেক ছেলে অলিল সরদারের অবস্থাও ভালো না। সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওরা আমাদের সব শেষ করে দিল। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, ‘বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে তিনজন মারা গেছে। এই ঘটনায় নিহত সাইফুল ও আতাউরের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। এ ছাড়া নিহত সাইফুলের নামেও একাধিক মামলা ছিল।’

হঠাৎ ঘন কুয়াশায় মাদারীপুর অন্ধকারে

তারেক রহমানের সংবর্ধনা: ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের চাপ

শাজাহান খানের বাড়ি-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাহারা দেওয়া যুবদল নেতার পদ স্থগিত

১ বছর ধরে নষ্ট ২৫০ সিসিটিভি ক্যামেরা

হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে মাদারীপুরে মহাসড়ক অবরোধ

আড়িয়াল খাঁ নদে ভাসছিল নারীর লাশ

মাদারীপুরে গাছ ফেলে মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশ দেখে পালাল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা

রাজৈরে চিকিৎসকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

শিবচরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে মশাল মিছিল, অবরোধ কামাল সমর্থকদের

মাদারীপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ