লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, এলজিইডির অবহেলা ও সমন্বয়হীনতার কারণে গাছ রেখে প্রশস্ত করায় সড়কে দুর্ঘটনার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, পাটগ্রাম থেকে জগতবেড় ইউনিয়নের ভেরভেরিরহাট যেতে মুন্সিরহাটগামী সড়কটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ (জিওবিএম) প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৩৩ লাখ ৫২ হাজার ৮১৪ টাকা ব্যয়ে ১৬৮০ মিটার (দেড় কিলোমিটার) অংশ সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। কাজ পায় পাটগ্রামের মেসার্স ফারিয়া কন্ট্রাকশন্স। সড়ক নির্মাণে কোনো বিঘ্ন থাকলে তা নিরসনের পরই ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে এলজিইডি।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি স্থানীয় এলজিইডি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি করে। সড়ক সংস্কারে গাছ অপসারণের প্রয়োজন হলে কাজ শুরুর আগেই এলজিইডি যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি। বরং সড়কে গাছ থাকা অবস্থাতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ শুরু করতে বলা হয়। এরপর ঠিকাদারের লোকজন গত ২১ জানুয়ারি কাজ শুরু করে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানায়, কাজ শুরু করে ৬ মাস ধরে সড়কে ইটের খোয়া বিছিয়ে (ডব্লিউবিএম) রোলার দিয়ে বেস তৈরি করে তাঁরা অপেক্ষা করছিলেন গাছ অপসারণের। কিন্তু এলজিইডি এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই কাজের নির্ধারিত সময় ঘনিয়ে আসায় সড়কের ওপর গাছ রেখেই কার্পেটিং শেষ করতে বাধ্য হন তাঁরা।
এলজিইডি সূত্র জানায়, প্রশস্তকরণ কাজে সড়কের অতিরিক্ত অংশে তিনটি কাঁঠাল, দুটি মেহগনি ও দুটি ইউক্যালিপটাসগাছ অপসারণে কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। যথাযথ অনুমতি না পাওয়ায় গাছগুলো কাটা সম্ভব হয়নি।
পথচারী লাবু হোসেন (৪০) বলেন, ‘এ সড়ক দিয়ে আমরা নিয়মিত চলাচল করি। এমন গাছ থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি খুব বেশি। শীতের এ সময়ে কুয়াশা পড়ায় ঝুঁকি আরও বেড়েছে। এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতির শঙ্কাই বেশি।’
জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফারিয়া কন্ট্রাকশন্সের স্বত্বাধিকারী শামসুল হক বলেন, ‘প্রশস্তকরণ কাজে সড়কের ওপর থাকা নয়টি গাছ সমস্যা সৃষ্টি করেছে। গাছগুলো অপসারণে এলজিইডিকে কয়েকবার জানিয়েছি, চিঠিও দিয়েছি; কিন্তু অনুমতি পাওয়া যায়নি। সময়ও প্রায় শেষ, তাই বাধ্য হয়ে গাছ রেখেই কাজ শেষ করেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী আহমেদ হায়দার জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না। গাছ অপসারণের জন্য জেলা পরিষদ ও বন বিভাগকে বহুবার চিঠি দিয়েছি; কিন্তু অনুমতি পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’