হোম > সারা দেশ > কুড়িগ্রাম

সরকারি পাওনার ফাঁদে ২৪ জেলে পরিবার

আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য না হয়েও জলাশয় ইজারার বকেয়ার দায়ে সরকারি সার্টিফিকেট মামলায় ফেঁসেছে ২৪ জেলে পরিবার। ফুলবাড়ী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ধরণী বিশ্বাস ন্যাঙ্গা ও সাধারণ সম্পাদক মফিদুল হক মফির প্রতারণা ও জালিয়াতির কারণে তাঁদের কাঁধে দেনার দায় চেপেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলায় দিশেহারা পরিবারগুলোর সদস্যদের দিন কাটছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায়।

ভুক্তভোগী জেলেরা এ ঘটনার তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে কয়েক দিন ধরে উপজেলা সদরে মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। এ ছাড়া তাঁরা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা ও সমবায় কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি ধরণী ও সম্পাদক মফিদুল ২৮ সদস্যের সমিতি গঠন করে উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের মাধ্যমে নিবন্ধন করেন। এতে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে উপজেলার দক্ষিণ কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের ২৪ জেলেকে তাঁদের অজান্তে সদস্য বানানো হয়। এরপর সমিতির নামে ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের ৩৭ একর সরকারি বদ্ধ জলাশয় ‘ফুলসাগর লেক’ তিন বছরের জন্য ৪৮ লাখ ৬০ হাজার টাকায় জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নেওয়া হয়। প্রতিবছরের শেষে ইজারার আংশিক টাকা জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিন বছরেও তা দেওয়া হয়নি।

এদিকে ইজারার সরকারি পাওনা আদায়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেনারেল সার্টিফিকেট শাখা সমিতি সব সদস্যের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা করে নোটিশ দেয়। নোটিশে আগামী ২ এপ্রিলের মধ্যে প্রত্যেক সদস্যকে পাওনা বাবদ ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা পরিশোধের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। আকস্মিক সরকারি এই নোটিশে হতভম্ব ও দিশেহারা হয়ে পড়ে এসব জেলে পরিবার। পরে তাঁরা খোঁজ নিয়ে সভাপতি ও সম্পাদকের প্রতারণার তথ্য জানতে পারেন। এত দিন এই দুজন সমিতির তথ্য গোপন রেখে মাছ চাষ করে লাভবান হন। এখন বিষয়টি ফাঁস হওয়ায় অবস্থা বেগতিক দেখে গা ঢাকা দেন। ভুক্তভোগী জেলেরা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় সভাপতি ও সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

ভুক্তভোগী জেলে কামাক্ষা বিশ্বাস (৭০) জানান, বয়স বাড়ার কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ছেলের আয়ে কোনোমতে জীবন চলে। কিছু না জানলেও তাঁকে ওই ভুয়া সমিতির গায়েবি সহসভাপতি বানিয়ে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এখন মৃত্যু ছাড়া এ থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই।

সমিতির আরেক সদস্য দেবেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাসের শাশুড়ি লক্ষ্মী রানী বিশ্বাস বলেন, ‘আমার জামাতা পাঁচ বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। এখন সে সরকারি টাকা কীভাবে শোধ করবে? জেলে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’

জেলে ক্ষীরোদ চন্দ্র বিশ্বাসের স্ত্রী নয়ন বালা দেবী জানান, তাঁর স্বামী পুঁজির অভাবে মাছের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। স্থানীয় গৃহস্থের বাড়িতে দিনমজুরি করে তাঁদের সংসার চলে। কাজ হলে খেতে পান, না হলে উপোস দিতে হয়। তাঁরা যে ওই সমিতির সদস্য, তা ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ বলেন, ‘জলমহালের ইজারার মূল্য পরিশোধ না করায় নিরীহ জেলেদের নামে সার্টিফিকেট মামলার ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে এটি এখন আদালতের বিষয়। তার পরও জেলা প্রশাসককে প্রকৃত ঘটনা জানানো হবে।’

যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক সাইদুল আরিফ জানান, নিরপরাধ ও নিরীহ মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেই নির্দেশনা ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উলিপুরে হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর চাপ

মাদ্রাসার পরিচালককে হত্যার হুমকির চিরকুট, থানায় জিডি

সুদান হামলা: সন্তান ভূমিষ্ঠের আগেই পৃথিবী ছেড়ে যেতে হলো শান্তিরক্ষী শান্তকে

সুদানে হামলা: শোকে বিহ্বল শান্ত ও মমিনুলের পরিবার, লাশের জন্য অপেক্ষা

পাঁচ দফা দাবিতে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থান

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

রোজার আগেই নির্বাচন হতে হবে, যত বিলম্ব হবে তত শঙ্কা বাড়বে: মান্না

কুড়িগ্রামে ছাত্রাবাস থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

উলিপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

১৬ শতক জমির বিরোধে ঝরল ভাই-বোনসহ তিনজনের প্রাণ