কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর-মরিচা ডিগ্রি কলেজে তালা ভেঙে কার্যালয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান (৫৮) ও তাঁর ছোট ভাই ইউনুস আলীকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকার নিজ বাসা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে দৌলতপুর থানা-পুলিশ।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার আব্দুল মান্নান ফিলিপনগর এলাকার ইসমাইল সরদারের ছেলে এবং কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৪ মে সকালে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আব্দুল মান্নান ও তাঁর সহযোগীরা কলেজে প্রবেশ করেন। তাঁরা কার্যালয় কক্ষের তালা ভেঙে ভাঙচুর চালান এবং একটি ল্যাপটপ, ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র লুট করে নিয়ে যান। এ সময় হামলাকারীরা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেজাউর রহমান মাসুমকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
ঘটনার তিন দিন পর ১৭ মে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেজাউর রহমান মাসুম বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় আব্দুল মান্নান, ইউনুস আলী ও মেহেদীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর আব্দুল মান্নান জনরোষের মুখে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর এলাকাবাসী ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ৯ সেপ্টেম্বর মাসুম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আব্দুল মান্নান বিভিন্নভাবে তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। ১৩ সেপ্টেম্বর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়। ১৪ মে সকাল ১০টার দিকে কলেজে প্রবেশের সময় মান্নান ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি কক্ষে আটকে রাখেন এবং পরে লুটপাট চালান।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, কলেজে ভাঙচুর, লুটপাটসহ হত্যার হুমকির অভিযোগে সাবেক অধ্যক্ষ ও তাঁর ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ফিলিপনগর-মরিচা ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি স ম সরওয়ার বলেন, ‘আসামি আব্দুল মান্নান ও তাঁর লোকজন কলেজের তালা ভেঙে ল্যাপটপ, নথিপত্র ও টাকা লুট করে নিয়ে গেছেন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’