ঝালকাঠি সদর উপজেলার সংগ্রামনীল পুলিশ বক্স থেকে সারেঙ্গল বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। কোথাও কোথাও পিচ উঠে কাদাপানিতে পরিণত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় মানুষ, শিক্ষার্থী ও রোগীরা।
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে সড়কটির পূর্ণাঙ্গ পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে বছরের পর বছর ধরে চলা দুর্ভোগের অবসান ঘটে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্য অনুযায়ী, সড়কটি প্রথম নির্মিত হয় ২০০১-০২ অর্থবছরে আরডিপি-১৯ প্রকল্পের আওতায়। প্রথমে নির্মাণ হয় চার কিলোমিটার। এরপর বিভিন্ন সময়ে কিছু অংশ সংস্কার করা হলেও সর্বশেষ ২০১৮ সালে জিওবি মেইনটেন্যান্স প্রকল্পে মাত্র এক কিলোমিটার সংস্কার করা হয়। তারপর আর কোনো কাজ হয়নি।
এই সড়ক দিয়ে একটি ইউনিয়ন পরিষদ, একাধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন চলাচল করে। বর্ষাকালে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীরা কাদার মধ্য দিয়ে হাঁটতে গিয়ে কখনো পড়ে যাচ্ছে, আবার কেউ কেউ ভিজে স্কুলে যাচ্ছে।
সারেঙ্গল এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘এই সড়কটি বহুদিন ধরে ভাঙা। একটি কালভার্ট ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কাঠের পাটাতন দিয়ে অস্থায়ীভাবে চলাচল চলছে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা হতে পারে।’ তারুলী গ্রামের আজগর আলী বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কালভার্ট দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। কাঠের তক্তা দিয়ে অস্থায়ীভাবে চলাচল করা হচ্ছে। এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়।’
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সালাউদ্দিন সোহাগ বলেন, ‘স্কুলগামী শিশুরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়। কেউ পড়ে যায়, কেউ ভিজে স্কুলে আসে। সড়কটি শুধু সংস্কার নয়, পূর্ণাঙ্গভাবে পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’ অটোরিকশাচালক শাহাজাহান মুন্সি বলেন, ‘ঈদের আগের দিন দুর্ঘটনায় পড়ি। যাত্রীরা আহত হন। এভাবে সড়ক থাকলে আরও বড় দুর্ঘটনা হতে পারে।’
জানতে চাইলে ৪ নম্বর কেওড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হেমায়েত উদ্দিন হিমু বলেন, ‘বহুবার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এই সড়কটির পূর্ণ সংস্কার। আমরা আশাবাদী, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে ঝালকাঠি এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।’