ঝিনাইদহে সড়ক সংস্কারের বালু-পাথর ও বিটুমিন মেশানোর কাজ চলছে বিদ্যালয়ের মাঠে। ফলে ধোঁয়া ও ধুলাবালু ছড়িয়ে পড়ছে শ্রেণিকক্ষসহ আশপাশের এলাকায়। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।
আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার কালীচরণপুর ইউনিয়নের মোসলেম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিষ্ঠানটির মাঠে রাখা পাথর-বালুর স্তূপ ও বিটুমিনের ব্যারেল। পাশেই চলছে বিটুমিন জ্বালানোর কাজ। সেখান থেকে নির্গত ধোঁয়া রোধে বিদ্যালয়ের বারান্দা ঢেকে ফেলা হয়েছে পলিথিন দিয়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সদর হাসপাতালের সামনে হামদহ স্ট্যান্ড থেকে নারিকেলবাড়িয়া বাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয় চার মাস আগে। এ জন্য নির্মাণসামগ্রী বিদ্যালয়ের মাঠে রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপি নেতাদের হাত করে ঠিকাদার মিঠু খান ও রাসেল আহমেদ এখানে মালামাল রেখেছেন। এখন এখানেই বিটুমিন মেশানোর কাজ করছেন।
কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে, বিদ্যালয়ের মাঠে রাস্তা সংস্কারের কাজ করছে। মাঠে পাথর ছড়িয়ে আছে। এতে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। কালো ধোঁয়ার কারণে ক্লাস করাও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলিবর্দ্দি বিশ্বাস বলেন, ‘স্কুলের মাঠে সড়কের নির্মাণসামগ্রী রাখার ব্যাপারে আমিসহ সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে আমরা কিছু করতে পারিনি। আমরা বাধ্য হয়েছি স্কুল বন্ধ করতে।’
জানতে চাইলে ঠিকাদার মিঠু খাঁ বলেন, ‘সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। এলাকার মানুষ ও স্কুলের লোকজন সবাই বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহারের জন্য আমাদের অনুমতি দেয়। মাঠে ফসল থাকায় আমরা খোলা জায়গা না পেয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহার করেছি। আর কখনোই কোনো স্কুলের মাঠে এই কাজ করব না।’
এ বিষয়ে কথা হলে সদর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সড়কটির কাজ করছে ঠিকাদার মিঠু খাঁ ও রাসেল। তারা সড়ক নির্মাণের মালামাল স্কুলের মাঠে রেখেছে, সেটা তাদের দায়ভার। আমরা তাদের স্কুলের মাঠ ব্যবহারে নিষেধ করেছি।’
যোগাযোগ করা হলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি যদি চায়, তাহলে তারা স্কুলমাঠ ব্যবহার করার অনুমতি দিতে পারে। তবে পাঠদান ব্যাহত হয় বা শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হয়, এমন কাজ করার কোনো সুযোগ নেই।’