বাবার একার উপার্জনে সংসার চলে না। তাই সংসারের হাল ধরেছে শিশু আরমান। এখন সে ঝাল মুড়ি বিক্রেতা। মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কুমার নদের ব্রিজের ওপর প্রতিনিয়ত দেখা মেলে তার। প্রতিদিন বিকেলে সে ভ্যানে ঝাল মুড়ির পাশাপাশি আমড়া, বাদাম ও জলপাইয়ের আচারের পসরা সাজিয়ে বিক্রি করে। ব্রিজটিতে ঘুরতে আসা ভ্রমণ পিপাসু ও পথচারীরাই তার দোকানের ক্রেতা।
উপজেলার টুপিপাড়া গ্রামের নাজিরুল বিশ্বাসের ছেলে আরমান খামারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বয়স পনেরোর কোঠায়। দরিদ্রের কশাঘাতে ছোট্ট আরমান এখন বাবার ব্যবসার হাল ধরেছে। আরমানের বাবা নাজিরুল বিশ্বাস দীর্ঘ দশ বছর ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গত ২ মাস হলো আরমান বাবার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরমানের বাবা নাজিরুল বিশ্বাস বলেন, বাড়ির বসবাসের ভিটাটুকুই সম্বল। ঝাল মুড়ির ব্যবসায় অনেক কষ্টে চলে পাঁচ সদস্যের সংসার। সন্তানদের মধ্যে সবার বড় আরমান। ঘরে ছয় ও আট বছরের দুটি কন্যা ও অসুস্থ স্ত্রী আছেন। একার উপার্জনে সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই ছেলেকে ঝাল মুড়ির ব্যবসায় লাগিয়ে দিয়েছেন।
নাজিরুল বিশ্বাস আরও বলেন, ‘ইচ্ছে হয় না সাওয়ালকে দিয়ে এ কাজ করাতে। কিন্তু কি করব? একা যা আয় করি তা দিয়ে সংসার চলে না। ছেলেকে নিয়ে আমি অনেক বড় স্বপ্ন দেখি। কয়েক বছর পরেই ছেলে লেখাপড়ার জন্য বাইরে পাঠিয়ে দেব।’
শিশু আরমান বলে, ‘করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় ব্যবসা চালিয়ে নিতে কোনো সমস্যায় হয়নি। এখন স্কুল খোলা তাতেও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। প্রতিদিন বিকেলে দোকান চালাই। আমি ঝাল মুড়ি বিক্রি করি তাই বাবা ভ্যান চালাতে পারে।’