স্কুলছাত্রী ধর্ষণ-পরবর্তী বিচার দাবিতে বিক্ষোভ থেকে সৃষ্ট সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়িতে প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা এখনো বলবৎ রয়েছে। এর মধ্যেই ‘জুম্ম ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া সড়ক অবরোধ আজ সোমবার থেকে তিন পার্বত্য জেলায় বিস্তৃত হয়েছে। ফলস্বরূপ, খাগড়াছড়ির প্রধান সড়কসহ জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো নীরব ও নিস্তব্ধ।
চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি প্রবেশের মুখে শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি আটকে পড়ায় স্থানীয় বাজারে খাদ্য ও নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। জনদুর্ভোগও ক্রমাগত বাড়ছে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার প্রবেশমুখ ফটিকছড়ি উপজেলার নয়াবাজার চেকপোস্টে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি খাদ্যগুদাম ও স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করার জন্য আসা গো-খাদ্য, পোলট্রি খাদ্য এবং আপেল, আঙুরসহ রোগীবাহী (ডায়াবেটিক) পণ্যবাহী শ খানেক ট্রাক সড়কে দাঁড়িয়ে আছে।
পানছড়ি উপজেলা সরকারি গুদামের মালবাহী ট্রাকচালক নাজমুল হাসান বলেন, ‘গতকাল (রোববার) বিকেল ৪টায় খাগড়াছড়ির প্রবেশমুখে এসে আটকা পড়েছি। চলমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার অভাব এবং অবরোধ থাকায় যেতে পারছি না।’
ট্রাকচালক আশিক জানান, প্রায় ৩০টিরও বেশি ট্রাক নিয়ে তাঁরা চরম দুরবস্থার মধ্যে আছেন। তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় দোকানপাট কম, খাবার নেই। সকালের চা-বিস্কুটে দুপুর গড়িয়েছে!’
ফলবাহী ট্রাকচালক নিজাম উদ্দিনের আশঙ্কা, ‘সকাল ৫টা থেকে আপেল, আঙুর, কমলা লোড করে রোদের মধ্যে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখছি। এগুলো পচনশীল পণ্য, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অবরোধের কারণে যেতে দিচ্ছেন না, অপেক্ষা করতে বলছেন।’
এ সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বাসযোগে আসা বহু যাত্রীকেও রাস্তায় ও দোকানপাটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল জানান, গত শুক্রবার পাহাড়ি সংগঠনের সমাবেশ পরবর্তী পাহাড়ি-বাঙালির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে জেলা সদর ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জুম্ম ছাত্র-জনতার সড়ক অবরোধের কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে জেলার প্রবেশমুখ নয়াবাজার চেকপোস্টে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সড়ক স্বাভাবিক হলেই আটকে থাকা গাড়ির চলাচল শুরু হবে।