ঝিনাইদহে ডাকাতির সময় ফাতেমা বেগম (৪২) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় ফাতেমার ছেলের বউ বিথি খাতুনকেও (২৫) গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঝিনাইদহ সদরের খালকুলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, ওবেদ আলী ও তাঁর ছেলে মেহেদী প্রবাসে থাকার সুযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের বাড়িতে ডাকাতি করা হয়। ডাকাতেরা প্রথমে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘরে ঢুকে ফাতেমা ও বিথিকে জিম্মি করে ঘরে রাখা টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে ফাতেমাকে খাটের ওপরে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এরপর তারা বিথির গলা কেটে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ সময় আহত বিথি কোনো রকমে প্রতিবেশী ওবায়দুরের বাড়িতে গিয়ে উঠানে পড়ে যান। বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাঁকে রক্তাক্ত দেখে কী হয়েছে জানতে চাইলে তিনি কাগজে (চিরকুটে) লিখে জানান যে, বাড়িতে কাজ করা রাজমিস্ত্রিরা ডাকাতির জন্য তাঁর শাশুড়িকে হত্যা করেছে। তারা তাঁকেও হত্যার চেষ্টা করে।
প্রতিবেশী ওবায়দুর বলেন, ‘আজানের পরপর বিথি এসে উঠানে পড়ে যায়। এ সময় বাড়ির নারীরা তাঁকে রক্তাক্ত দেখে ভয়ে চিৎকার করে। তখন আমি ছুটে গিয়ে দেখি বিথি পড়ে আছে। কী হয়েছে জানতে চাইলে গলা কাটা থাকায় সে ইশারা করে কাগজ দিতে বলে।’ তিনি আরও বলেন, তখন সে কাগজে লিখে দেয়, ‘ওরা মনে করেছে আমিও মারা গেছি। কান ফুটানো। আমি চিনি ফজলু মামার মিস্ত্রি আমার হাত-পা বাদিল।’ পরে আহত বিথিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে আজ ভোরে আহত বিথির লেখা চিরকুটের ভিত্তিতে সাগর (২৯) ও সুশান্ত (৪০) নামের দুজন কাঠমিস্ত্রিকে আটক করেছে পুলিশ। সাগরের বাড়ি পাশের দুর্গাপুর গ্রামে এবং সুশান্তর বাড়ি পশ্চিম ঝিনাইদহ গ্রামে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিথির লেখা চিরকুটের ভিত্তিতে দুজনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত দা। আটক আসামিরা স্বীকার করেছেন, তাঁরা দুজন এ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।